রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা কামারুজ্জামান। এ কথা জানিয়েছেন কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল।
মঙ্গলবার হাসান ইকবাল বলেন, ‘সরকার যেখানে রায়ের রিভিউ আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে না, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ করার অপেক্ষা রাখছে না। তার আগেই কামারুজ্জামান সাহেবকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এনে ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেখানে কীভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন তিনি।’
হাসান বলেন, ‘যদি এমন হতো সরকার আমাদের প্রতি ভদ্র আচরণ করছে, তবে হয়তো প্রাণভিক্ষার ব্যাপারে আবেদন করার একটা রাস্তা থাকত। তা ছাড়া, বড় কথা হলো, বাবা এরকম সরকারের রাষ্ট্রপতির কাছে কোনোভাবেই প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।’
হাসান ইকবাল বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য গাজীপুর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। এ সময় কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, আজ ছুটির দিন, তাই দেখা করার কোনো বিধান নেই। এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি বাবাকে গাজীপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হচ্ছে। তার মানে সরকার তড়িঘড়ি করে আমার বাবাকে “হত্যা” করতে চাইছে। এ জন্য আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেছি, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যেন বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারি। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এখনো দেখা করার বিষয়টি স্পষ্ট করেনি।’
তড়িঘড়ি বলছেন কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হাসান ইকবাল বলেন, ‘কেন তড়িঘড়ি বলব না। সংবিধানে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে। কাদের মোল্লার ক্ষেত্রেও রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ হতে ৭৮ দিন সময় লেগেছিল। তারপর রিভিউ করা হয়েছিল। কিন্তু কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রে কেন এ সুযোগগুলো দেওয়া হচ্ছে না। তাই বলছি, সরকার তড়িঘড়ি করেই আমার বাবাকে হত্যা করতে চাইছে।’
জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে রায় এবং বিএনপি সম্পর্কে হাসান ইকবাল বলেন, ‘গোলাম আযমের ক্ষেত্রে রায় নিয়ে কিছু বলেননি বিএনপি নেতারা। কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রেও কিছু বলছেন না তারা। এতে জামায়াতের মধ্যে দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে। এই মুহূর্তে বিএনপি যে আচরণ করছে, তাদের যে ইনঅ্যাকটিভিটি, তাতে নিজেরাই বিপদে পড়বেন। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হলেও বিএনপির চুপ থাকা ঠিক হচ্ছে না।’
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কামারুজ্জামানকে আপিল বিভাগ ফাঁসির রায় বহাল রাখেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব প্রকাশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তবে তিনি বলেছিলেন, রায়ের শর্ট কপি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এর আগে কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে রিভিউয়ের শর্ট কপি দিয়েই রায় কার্যকর করা হয়েছিল। এবারও তাই হবে কি না, সে বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল নিশ্চিত করেননি।