প্রেতাত্মার সঙ্গে বিয়ে দিতে কবর খুঁড়ে তরুণীর লাশ চুরি করেছে এক দল ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ শানডং-এর একটি গ্রামে। চুরি করে কবর থেকে তরুণীর লাশটি তুলে কালো বাজারে বিক্রিও করেছে ওই কুচক্র। এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গত সপ্তাহে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
চীনে ‘গোস্ট ম্যারেজ’ বা প্রেতাত্মার সঙ্গে বিয়ের মতো একটি কুসংস্কার চালু রয়েছে। অবিবাহিত কোনো তরুণী মারা গেলে তাকে প্রেতাত্মার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার হয়। এ জন্য তার মৃতদেহ সম্প্রতি মারা যাওয়া অন্য আরেক জন অবিবাহিত পুরুষের কবরে রাখা হয়।
তারা মনে করেন, এই বিয়ে প্রয়াত দুইজনের জন্যই মঙ্গলজনক। এর মাধ্যমে সেখানে তারা সারা জীবন সুখে থাকতে পারবেন।
এ ধারণার কারণে চীনে তরুণীদের লাশ কবর থেকে চুরির হওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটে। যদিও দেশটিতে প্রেতাত্মার সঙ্গে বিয়ের দেওয়ার রীতি নিষিদ্ধ রয়েছে। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় প্রেতাত্মার সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি খুব কমই ঘটে। তবে চীনের প্রান্তিক অঞ্চলে এখনো এটি বেশ প্রচলিত।
এ ব্যাপারে স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেন ওই লাশ চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত একজন। তিনি বলেন, একটি লাশ ১৬ থেকে ২০ হাজার ইউয়ান বিক্রি করতেন। তবে সম্প্রতি কবর দেওয়া হয়েছে, এমন তরুণীর লাশ বেশ দামী। কয়েক বছর আগে মারা যাওয়া মৃতদেহের কোনো দাম নেই।
মজার বিষয় হলো তরুণীর লাশটি কবর থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন তার পরিবার। অবশেষে প্রতিবেশী প্রদেশ হেনবাই থেকে তরুণীর মৃতদেহ ৩৮ হাজার ইউয়ান দিয়ে ক্রয় করে ফের কবর দেন তার পরিবার।
চীনে এ কুসংস্কার বেড়ে যাওয়ায় এটাকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ অপরাধে দোষীকে তিন বছরের কারাদণ্ডেরও বিধান রাখা হয়েছে। ২০১৩ সালে শানসি প্রদেশে তরুণীর লাশ কবর থেকে তুলে কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ার অপরাধে ৪ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
১৯৫৯ সাল পর্যন্ত সুদান, ফ্রান্স ও ভারতে প্রেতাত্মার সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি প্রচলন ছিল।