illegle-imigrationযুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত নতুন আইন পাস হয়েছে। এখন থেকে অবৈধ অভিবাসীকে যে কোনো অপরাধে পুলিশ আটক বা গ্রেফতার করলে ইমিগ্রেশন এজেন্সিকে জবাবদিহী করতে হবে না। আগে এ ব্যাপারে কিছুটা বাধ্যবাধকতা ছিল।

স্থানীয় সময় গত বুধবার সিটি কাউন্সিলে এ বিষয়ের পক্ষে ৪১ এবং বিপক্ষে ৬ ভোটে একটি বিল পাস হয়। ফলে এখন থেকে কোনো অবৈধ অভিবাসীর বিষয়ে তথ্য দিতে পারবে না নিউ ইয়র্ক পুলিশ। সিটি কাউন্সিলের স্পিকার মেলিসা মার্ক ভিভেরিটো বিলটি উত্থাপন করেন। বিলটিতে এখনও নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও স্বাক্ষর করেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সমর্থনেই বিলটি উত্থাপন করা হয়েছিল। তাই মেয়রের স্বাক্ষর এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

chardike-ad

এদিকে বিপুল ভোটে বিলটি পাস হলেও এ নিয়ে সমালোচনাও আছে। বিলের বিপক্ষে মতপ্রকাশ করে রিপাবলিকান দলের নেতা ভিনসেন্ট ইগনিজিও বলেছেন, এটা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারে। তার সাথে সুর মিলিয়েছেন ডেমোক্রেট দলীয় একাধিক নেতাও।

এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ডেমোক্রেট দলীয় নেতা পল ভেলন সাংবাদিকদের বলেন, কোনো অবৈধ অভিবাসী অপরাধ করলেও তার বিষয়ে ইমিগ্রেশন এজেন্সিকে কোনও তথ্য দেয়া যাবে না, এটা সঠিক আইন না। অপরাধ করলেও সে এ সুবিধা পাবে। এটা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো হলো না। তিনি মনে করেন, এ বিল পাস হওয়ার অর্থই হচ্ছে ‘একটা ভুল সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নেয়া’।

মেয়র বিল ডি ব্লাজিও বিলটিতে স্বাক্ষর করলেই এটা আইনে পরিণত হবে। তখন আর শুধুমাত্র অবৈধ হবার কারণে কোনো অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে ডিপোর্ট করার সুযোগ থাকবে না। যদি না ওই অভিবাসী বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে না জাড়িয়ে থাকে এবং কোন অপরাধের কারণে সাজা ভোগ না করে থাকে। এ আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ফেডারেল কোর্টের নির্দেশ ছাড়া নিউ ইয়র্ক সিটির কারাগারগুলো অবৈধ অভিবাসীদের ডিটেনশনে নেয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করবে। তবে ইমিগ্রেশন এজেন্সি কোনো অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার, আটক বা ডিপোর্ট করার ক্ষেত্রে এ বিল অন্তরায় হবে না।

সিটি কাউন্সিলের ইমিগ্রেশন কমিটির চেয়ারপারসন কাউন্সিলম্যান ডেনিয়েল ডুমের মতে, অভিবাসীদের নিয়ে ফেডারেল প্রশাসনের অমানবিক কৌশলের বিপক্ষে এ বিল পাস হওয়া একটি যুগান্তকারী উদাহরণ। বিপুল ভোটে বিলটি পাস হবার পরে বিলটির স্পন্সর সিটি কাউন্সিল স্পিকার মেলিসা মার্ক গণমাধ্যমকে জানান, এ দেশে বসবাস করা সকল নাগরিকের অধিকার রয়েছে ন্যায্য বিচার পাবার। মানুষের অধিকার পাবার বিষয়টিকে আমরা সম্মান করি।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টের এটর্নি এ্যাট ল’ মঈন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিউইয়র্ক পুলিশ অতীতেও কখনো অবৈধ অভিবাসীদের শুধুমাত্র অবৈধ হবার কারণে আটক বা গ্রেপ্তার করত না, এখনো করে না। তবে অপরাধ করলে আটক বা গ্রেপ্তার করে আগে এটা ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টকে তারা জানাতো। তবে এটা জানানোর কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। তারপরও পুলিশ আটকদের অপরাধ বিবেচনা করে বিষয়টি জানালে ইমিগ্রেশন এজেন্সি তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতো। কিন্তু এ আইন পাস হলে নিউ ইয়র্ক পুলিশ আর আটকদের বিষয়ে কোনো তথ্য ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টকে জানাতে পারবে না। এর ফলে অবৈধরা বাড়তি কোনো সুযোগ যেমন গ্রীন কার্ড, ওয়ার্ক পারমিট বা সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড পাবার যোগ্যতা অর্জন করবে না।