বাতাসে হালকা শীতের আমেজ, গা শিরশিরানি ভাব। নানারকম সোয়েটার-শালে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। সঙ্গে ক্লাব, আড্ডা, হইহুল্লোড়, জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া—চারদিকে উৎসবের আমেজ। তবে এসব কিছুর মধ্যে বাদ সাধে ঠান্ডা, হাঁচি, কাশি, জ্বর, রুক্ষত্বক শুষ্ক চুলের সমস্যা। তাই বলে কি শীতকাল উপভোগ করবেন না? নিশ্চয়ই করবেন, তবে কীভাবে?
মনে রাখতে হবে আমাদের শরীর কোনো পরিপার্শ্বিক পরিবর্তনের জন্য সময় নেয়। সেটা খাবার হোক, অঞ্চল হোক, হোক তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার পরিবর্তন। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীর কিছু সময় নেয়, এটাকে খাপ খাওয়াতে তখন বিভিন্ন শীতকালীন অসুখ আমাদের শরীরে আক্রমণের সুযোগ নেয়।
শর্দি-কাশি-হাঁচি, নিঃশ্বাসে কষ্ট, একবার ঠান্ডা লাগলে না সারার প্রবণতাসহ বিভিন্ন শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ শীতকালে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু সতর্ক হলে এবং কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে সহজেই এগুলোকে দুরে রাখা বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ভাইরাস জ্বর: শীতকালে ভাইরাস জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। বিভিন্ন ভাইরাস যেমন, অ্যাডিনোভাইরাস,রাইনোভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা খুবই কমন শীতকালে। বিশেষ করে শিশু,বয়স্ক এবং যাদের শরীরে অন্য রোগ যেমন, ডায়াবেটিস, ক্রনিক ব্রংকাইটিস আছে তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিকিৎসা: পর্য়াপ্ত বিশ্রাম, প্রচুর তরল জাতীয় খাবার, বিশেষত খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি, লেবু-চিনির শরবত খুবই উপকারী। ঠান্ডা জিনিস, যেমন ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রীম সম্পূর্ণ নিষেধ, প্যারাসিটামল- জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
প্রতিরোধ: আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। ছয় মাস বয়সের পর বাচ্চাকে এবং যাদের ক্রনিক ডিজিজ আছে তাদের ভ্যাকসি দেয়া যেতে পারে।
ভ উপযুক্ত রোগ দুটি অনেক ক্ষেত্রে একসঙ্গে থাকে, যদিও কোনোটির প্রকাশ আগে হতে পারে। শীতকালে অ্যালার্জি ও অ্যাজমা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। বারবার সর্দি-হাঁচি-কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বুকে চাপ ও আওয়াজ হয়। এসময় ঠান্ডা লাগার প্রবণতাও বেড়ে যায়।
যেসব জিনিস থেকে অ্যালার্জি হয় সেসব থেকে দুরে থাকা জরুরি। প্রয়োজনে অ্যালার্জির ওষুধ, নাকের স্পে,বিশেষ ক্ষেত্রে ইনহেলারও ব্যবহার করতে হতে পারে। এই শীতের সময় অনেকের সাইনোসাইটিসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
বারবার মাথা ধরা, সর্দি-কাশির প্রবণতা, কাঁশতে কাঁশতে বমি হওয়া, জ্বর ইত্যাদি সাইনোসাইটিসের লক্ষণ হতে পারে। কোনো কিছুতে অ্যালার্জি থাকলে সেদিকে নজর দিতে হবে। অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিকস খাওয়াও জরুরি।
ফুসফুসের সংক্রমণ লাং ইনফেকশন: ফুসফুসের সংক্রমণকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। আপার রেসপিরেটরি ট্রাক সংক্রমণ যা সাধারণত ভাইরাস দিয়ে হয়ে থাকে। আর লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাক সংক্রমণ যা ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হয়ে থাকে। তবে ভাইরাস নিউমোনিয়াও হতে পারে।
উপসর্গ: জ্বর, সঙ্গে কাশি, কফ, শরীর ব্যথা, বমি বমি ভাব। তবে ভাইরাস নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে সর্দি-হাঁচি,নাক দিয়ে পানি পড়ার লক্ষণও দেখা দিতে পারে। সাধারণত বাচ্চা ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এগুলো বেশি দেখা যায়। শীতকালে সাধারণত আনন্দ ও ছুটি কাটানোর সময়। তাই একটু সতর্ক হলে উপরোক্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে মুক্ত ও সুস্থ থাকা যায়।–ওয়েবসাইট।