সদ্য মরহুম অধ্যাপক পিয়াস করিমকে ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। পিয়াস করিমের বাবা সম্পর্কে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “২০/২১ বছর আগে একজন মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে এ ধরনের কথা শুনলে আমার খুব কষ্ট লাগে।”
রোববার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে ‘জুডিশিয়াল মেডিয়েশন স্কিল ট্রেনিং ফর অ্যাক্টিভ জাজেস’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, “পিয়াস করিম সম্পর্কে আমি যা বলেছি তা সত্য। আমার জানামতে পিয়াস করিমের বাবা কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।”
আইনমন্ত্রী বলেন, “পিয়াস করিমকে ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে কুমিল্লা সার্কিট আটকে রেখেছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৩ বছর। পরে পিয়াস করিমের বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিমকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শর্ত মেনে বন্ড সই দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। পাক বাহিনীর শর্ত ছিল তারা পিয়াস করিমকে মুক্ত করে দেবে, তবে সে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কোনো কাজ করতে পারবে না। কোনো বৈঠক করতে পারবে না।”
মন্ত্রী বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে এসে পিয়াস করিমের বাবা পাক বাহিনীর শর্ত মেনে শান্তি কমিটির সভাপতি হন। তখন তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মরক্ষার্থে ডান্ডিকার্ড (পরিচয়পত্র) প্রদান করেছেন।” ধীরেন্দ্র দত্ত হত্যার বিষয়ে পিয়াস করিমের বাবার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তাও গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, “২০/২১ বছর আগে একজন মৃত ব্যক্তির বিষয়ে না জেনে শুনে এসব কথা বলা ঠিক না।”
এছাড়া মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে চূড়ান্ত রায়ের পর রাষ্ট্রপতির নিকট থেকে ক্ষমা না পেতে আইন তৈরি করা হতে পারে। তবে আইনমন্ত্রী এও বলেন যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে সংসদে এমন আইন পাস করা হবে যাতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়।
তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, সংবিধানের ‘আর্টিকেল ৪৯’র মাধ্যমে যুদ্ধপরাধীদের ক্ষমা করে দেয়া হবে দুঃখজনক। কোনো রাষ্ট্রপতি যদি ক্ষমা করে দেন তবে সেটাও দুঃখজনক বিষয় হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সাংবাদিকেদের বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে (দল ও সংগঠন) হিসেবে জামায়াত ইসলামীর বিচারের জন্য আগামী ২৭ অক্টোবরের পরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হতে পরে। অথাৎ আগামী মাসের মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এছাড়া সাঈদীর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবো।