রোগব্যাধি মানুষের শ্রেণী, পেশা, বয়স বিচার করে আসে না। আবার আজকাল দুরারোগ্য ব্যধিগুলো যেন সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে উঠছে! মরণব্যাধি একবার শরীরে বাসা বেঁধে বসলে তা থেকে মুক্তি পাওয়াটা একপ্রকার অসম্ভবই হয়ে পরে। অথচ আপনার একটু সচেতনতা আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে যাওয়া রোগটিকে প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করতে সহায়ক হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিরাময়টাও খুব অসাধ্য কিছু থাকে না। বাংলা টেলিগ্রাফের স্বাস্থ্য পাতায় আজকের আয়োজনে চলুন পরিচিত হওয়া যাক মরণব্যাধি ক্যান্সারের ১০টি লক্ষণের সাথে।
১. ফুসফুসে ক্যান্সারের প্রথম লক্ষণই হল শ্বাসকষ্ট। যাদেরই এই রোগ হয় তারাই শুরুতে বলেন, শ্বাস নিতে গিয়ে যেন বাতাসের অভাব বোধ করছেন। এবং হাঁপানির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন!
২. কাশি আর ব্রঙ্কাইটিস – দুটোই ফুসফুস ক্যান্সার আর লিউকেমিয়ার ‘কমন ফ্যাক্টর’। আবার সাধারণ ব্রঙ্কাইটিস হলেও কাশি আর বুকে ব্যথা হয়। পার্থক্য করবেন কী করে? ব্রঙ্কাইটিসের কাশি আর বুকে ব্যথা চিকিত্সায় সেরে যায়। যখনই তা সারে না, বুঝবেন ব্যাপারটা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে।
৩. লিউকোমিয়ায় রক্তে শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় শরীর চট করে সংক্রমণজনিত রোগে কাবু হয়ে পড়ে। যেমন, জ্বর, ফ্লু বারবার হতে থাকে।
৪. খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া গর্ভাশয় ও ফুসফুস ক্যান্সারের প্রথম ধাপ হলেও হতে পারে।
৫. শরীরের কোথাও আচমকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া লসিকাতন্ত্রে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এটা ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ হতেও পারে। যেমন বগলের নীচে ঘর্ম-নিঃসারক গ্রন্থি ব্যথাযুক্ত হয়ে ফুলে যাওয়া স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ এবং কুঁচকি বা ঘাড়ে এরকমটা হলে লিউকেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
৬. কোনও আঘাত ছাড়াই শরীরে কালশিরা বা কালশিটে দাগ দেখা দেওয়া লিউকেমিয়ার আরও একটি পূর্ব লক্ষণ। সেই সাথে মুখে, ঘাড়ে, বুকে লাল স্পট দেখা দিলে খুব সহজভাবে নেবেন না ব্যাপারটাকে।
৭. পেটে ঘিনঘিনে ব্যথা মানেই ‘সিস্ট’ হয়েছে ভেবে উড়িয়ে দেবেন না। এই ব্যথা যে কোনও ধরনের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
৮. পায়ুপথে মলের সঙ্গে রক্তপাত সাধারণত কোলন (মলাশয়) ক্যান্সারের লক্ষণ।
৯. ডায়েটিং বা শরীরচর্চা ছাড়াই ওজন কমে যাওয়াটাও কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। কারণ, এই রোগে খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়। ফলে বিনা কারণে ওজন কমতে থাকে।
১০. নখের রং পাল্টে যাওয়া অনেক রকমের ক্যান্সারেরই প্রাথমিক লক্ষণ। যেমন, নখে বাদামি বা কালো রেখা বা ছিটে দাগ ত্বকের ক্যান্সারের কথাই বলে। আবার নখের রং বিবর্ণ হলে বুঝতে হবে লিভার (যকৃত) ঠিকঠাক কাজ করছে না এবং তা লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ।
উপরোক্ত লক্ষণসমূহের একটিও যদি আপনার বর্তমান কোন অসুস্থতার সাথে মিলে যায় তবে দেরী না করে এখনই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।