প্রতিটা মানুষেরই রক্তের গ্রুপটা জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধু অন্যের প্রয়োজনে রক্ত দেওয়ার জন্যই দরকার নয়, বিয়ের ক্ষেত্রে সঙ্গীর রক্তের সঙ্গে গ্রুপ ম্যাচিংয়ের জন্যও দরকার। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। এছাড়া রক্তের ধরন জানা থাকলে আরও অনেক কিছুই জানতে পারবেন শরীর সম্বন্ধে। এই ধরুন, চট করে ওজন কমাতে পারবেন কিনা! বিভিন্ন রোগে ভোগার সম্ভাবনা কতটুকু অথবা শরীরে কোন খাবারের কী প্রতিক্রিয়া বা অবসাদে কেমন আচরণ করবেন ইত্যাদি।
১. সমীক্ষা বলছে, রক্তের টাইপ জানা থাকলে আপনার হতে পারে এমন কিছু রোগ সম্বন্ধে আগাম জানতে পারবেন। যেমন, ব্লাড টাইপ ‘O’ হলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কম থাকলেও স্টম্যাক আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবার টাইপ ‘A’ যাদের তারা চট করে জীবাণু সংক্রমণে ভোগেন। আবার একই গ্রুপের নারীদের ফার্টিলিটি বেশি। টাইপ ‘AB’ ও ‘B’-এর অধিকারী হলে কিন্তু প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
২. সবার শরীরে অ্যান্টিজেন আছে। এগুলো আমাদের শরীর কোনও কিছুতে কীভাবে সাড়া দেবে সেটা ঠিক করে দেয়। সেটা খাবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ‘ল্যাকটিন’ জাতীয় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার কারও শরীরে ক্লান্তি, কারও মাথা ধরা, বিপাক ক্রিয়া, ত্বকের সমস্যা – এমনি হাজার প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। এগুলো রক্তের গ্রুপ থেকে সহজেই জেনে নেওয়া যায়।
৩. অবসাদে ভিন্ন প্রকৃতির রক্তের মানুষের আচরণও ভিন্ন। টাইপ ‘A’ রক্তে স্ট্রেস হরমোন করিস্টল প্রচুর পরিমাণে তৈরী হওয়ায় এরা চূড়ান্ত অবসাদে ভোগেন। তেমনি শরীরে প্রচুর অ্যাড্রিনালিন তৈরি হওয়ায় ‘O’ গ্রুপের অধিকারীরা অবসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, নয় তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবেন। একই সঙ্গে অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে এদের কিছু বেশি সময় লাগে।
৪. একেক ধারার রক্তের মানুষের অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ একেক রকম। সেই হিসেবে একই ধরনের খাবারে ভিন্ন জনের শরীরে ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমন, ব্লাড টাইপ ‘A’ শর্করা জাতীয় খাবার দ্রুত রক্তে মিশিয়ে দিতে পারে। সেখানে টাইপ ‘O’ শর্করা জাতীয় খাবার শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমিয়ে রাখে। তাই রক্তের গ্রুপ জেনে সহজেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় কোন খাবার কার বেশি বা কম গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশ প্রতিদিন।
৫. রক্তের প্রকৃতির ভিন্নতার জন্যই সবার শরীরে একই পরিমাণ পুষ্টির দরকার পড়ে না। তাই নিজের রক্তের টাইপ অনুসারে ডায়েট মানতে পারলে ওজন, সংক্রমণ ও প্রদাহের পরিমাণ কমিয়ে শরীরে এনার্জি বাড়িয়ে তোলা যায়। একইসঙ্গে আগে থেকে সচেতন হয়ে অনেক রোগকে দূরে রাখা যায়।