kim jong unএকমাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিতে দেশটির নেতা কিম জং-উনের অনুপস্থিতির কারণে তাকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনা জোরদার হচ্ছে। কিমকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের একটি কনসার্টে। স্ত্রী রি সোল-জু ও বোন কিম ইউ-জং’সহ আরো কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি।

ওই অনুষ্ঠানে কিমকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। এরপর আর কোনো অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যায়নি। সর্বশেষ উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দল ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভায় তিনি উপস্থিত না হলে তাকে নিয়ে গুজব জোরদার হয়।

chardike-ad

৩১ বছর বয়সি তরুণ নেতা প্রথম জনসম্মুখে এসেছিলেন ২০১০ সালে এবং পিতা কিম জং-ইলের মৃত্যুর পর ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেশটির সর্বোচ্চ নেতার পদে বসেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১২ সালের ৭ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৪ দিন লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন কিম।

কিম জং-উনের অনুপস্থিতিকে ঘিরে মূলত দু’টি জল্পনা জোরালো হচ্ছে। এর  প্রথমটি হচ্ছে তার স্বাস্থ্য এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিয়্ন্ত্রণ নিয়ে ষড়যন্ত্র। সম্প্রতি দেশটির গণমাধ্যম তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে শুধু এতটুকুই জানিয়েছিল যে, তিনি ‘অস্বস্তিবোধ’ করছেন।

কিমকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার কারণে তিনি গত ১০ অক্টোবর ক্ষমতাসীন দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যোগ দিতে পারেননি বলেও গুজব জোরদার হচ্ছে। অবশ্য দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে এ জল্পনা নাকচ করে দিয়েছে।

পরলোকগত নেতা কিম জং-ইলের তৃতীয় ছেলে হচ্ছেন কিম জং-উন। বয়সে তরুণ হওয়া সত্ত্বেও ইলের সবচেয়ে পছন্দের স্ত্রীর সন্তান হিসেবে পরবর্তী নেতা হিসেবে তাকে মনোনয়ন দিয়ে যান ইল। প্রথমদিকে রাজনীতিতে আনাড়ি উনকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বিকভাবে সহায়তা করেন তার ফুফা জ্যাং সং-থায়েক। কিন্তু গত জানুয়ারিতে থায়েককে হঠাৎ করে মৃত্যুদণ্ড দেন কিম জং-উন। অনেকে মনে করছেন, থায়েকের মৃত্যুর পর থেকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় উনের ভিত্তিগুলো একের পর এক ধসে পড়তে থাকে। তাদের মতে, ক্ষমতালিপ্সু একদল সেনা কর্মকর্তা কিমের কানভারী করে থায়েককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। সেই চক্রটিই হয়তো এখন কিমকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।