Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ টানতে চীন-জাপানের পর এবার দক্ষিণ কোরিয়াকে টার্গেট করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি দেশটি সফর করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সেখানে তিনি দেশটির নীতি নির্ধারকসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংসহ বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে তোফায়েল আহমেদ বলেন, চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন কোরিয়ান ইপিজেড-এ কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত কোম্পানি স্যামসাংসহ অনেক কোম্পানি বড় ধরনের বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এনে দেশটির উদ্যোক্তারা এ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

Flag-Pins-Bangladesh-South-Koreaবর্তমানে ঢাকা ইপিজেড-এ ৭২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কোরিয়ান বিনিয়োগ রয়েছে। চট্টগ্রামে বিনিয়োগ এলে শুধু কোরিয়ান বিনিয়োগ হাজার বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশটির রাজধানী সিউলে কোরিয়ান ফেডারেশন অব স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম ইনভেস্টমেন্ট আয়োজিত ‘কোরিয়া-বাংলাদেশ জয়েন্ট বিজনেস রাউন্ডটেবিল মিটিং’ এবং কোরিয়া ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সি (কোট্রা) আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সেখানে তিনি বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের রয়েছে বিপুলসংখ্যক দক্ষ জনশক্তি। সেখানে কম খরচে বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগ করতে চীন, জাপান, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে। এতে করে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সরাসরি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেমিনারে তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে আর্থিক ও নীতিগত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা, শিল্প কারখানার জন্য ব্যাংক ঋণ সুবিধাসহ প্যাকেজ সুযোগ-সুবিধার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া এসব সুযোগ সুবিধা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তোফায়েল।

chardike-ad

মন্ত্রী দেশের বস্ত্র ও তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে ঢাকা ইপিজেড, বেসরকারি ইপিজেড, অর্থনৈতিক জোন, আইসিটি পার্ক-এ কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, কোরিয়ান বিনিয়োগকারীরা সরকার ঘোষিত এসব সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসবে। এ প্রসঙ্গে তিনি কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সফর করে সুযোগ-সুবিধা দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ারও আহ্বান জানান। প্রসঙ্গত, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৪৪ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১ হাজার ১৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল মাত্র ৯৫ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত ছয় বছরে দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। দুই দেশের বাণিজ্য বাড়াতে দক্ষিণ কোরিয়া এরই মধ্যে ৪ হাজার ৮০২টি বাংলাদেশি পণ্যের ডিউটি শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে কোরিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়বে বলে আশা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ প্রতিদিন।