সামর্থ্য থাকলেই সবার ইচ্ছা হয় চোখ মেলে বিশ্বের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে। তবে ইচ্ছা ও সামর্থ্য থাকলেই হয় না। সবার আগে প্রয়োজন হয় যে দেশে যাবেন সেদেশের সরকারের অনুমোদন পত্র বা ভিসা। আর এ ভিসা পেতেই ভ্রমণকারীকে পড়তে হয় সবচেয়ে বেশি ঝামেলায়। তাই জেনে নিতে পারেন ভ্রমণ পিয়াসুদের জন্য প্রথম পছন্দের দেশ মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়ার উপায়।
মালয়েশিয়া সরকার প্রধানত দু’ধরনের ভিসা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রথমটি হলো রেফারেন্স ছাড়া ভিসা (বি ডব্লিউ টি আর)। বিভিন্ন দেশে মালয়েশীয় মিশন থেকে এ ধরনের ভিসা ইস্যু করা হয়। এ ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৪ দিন অবস্থানের অনুমতি দেয়া হয়।মেয়াদ বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই।
এ ভিসার জন্য আবেদন করার আগেই ভ্রমণকারীকে ফেরার টিকেট কাটতে হবে। তবে মালয়শিয়া ভ্রমণের পর অন্য দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে সে দেশে যাওয়ার বিমান টিকেট থাকলে হবে।
দ্বিতীয়ত, রেফারেন্সসহক দেওয়া ভিসা (বি ডব্লিউ আর)। মালয়েশীয় ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের অনুমোদনের মাধ্যমে এ ভিসা ইস্যু করা হয়। মালয়েশিয়া প্রবেশের আগেই মালয়েশিয়ান কনস্যুলেট বা দূতাবাস থেকে এ ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। কেবলমাত্র ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে এই ভিসা ইস্যু করা হয়। ভ্রমণটি মালয়োশীয় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্পন্সর করতে হবে। যে প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করবে সেটি অবশ্যই একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান হতে হবে এবং ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে ফর্ম ৯, ২৪ এবং ৪৯ জমা দিতে হবে।
এ ভিসার আবেদন করতে স্পন্সরকে জনপ্রতি দুই হাজার মালয়েশীয় রিঙ্গিত জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। ভ্রমণকারী সর্বোচ্চ ৩০ দিন অবস্থান করতে পারবেন এবং মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ নেই।
যেভাবে আবেদন করতে হয়:
ভিসা আবেদন ফরমটি অনলাইনে(www.imi.gov.my)সাইট থেকে ডাউনলোড করে যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। সরাসরি ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয় না। ২৫টি অনুমোদিত এজেন্সীর মাধ্যমে ভিসা আবেদনপত্রটি জমা দিতে হবে। আর ভিসা ইস্যু করার বিষয়টি দূতাবাসের ওপর নির্ভরশীল।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি:
• সাদা পটভূমিতে (ব্যাকগ্রাউন্ড) দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি; ছবিগুলোর স্টুডিও প্রিন্ট হতে হবে।
• পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ৬ মাস হতে হবে এবং পাসপোর্টে অন্তত তিনটি ধারাবাহিক খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
• পাসপোর্টের ফটোকপি ও মূলকপি।
• আগে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করে থাকলে ভিসার কপি।
• ফিরতি বিমান টিকেটের কপি।
• আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ হিসেবে অন্তত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সাথে ব্যাংক সলভেন্সি স্টেটমেন্ট। বাংলাদেশর বাইরে অবস্থানরতদের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড।
• ভ্রমণের কারণ উল্লেখ করে করা আদেনপত্র।
• কারো আমন্ত্রণে মালয়েশিয়া গেলে আমন্ত্রণপত্র বা রেফারেন্স লেটার।
• বাংলাদেশে বসবাস করছেন অথচ বাংলাদেশী নন এমন আবেদনকারীর ক্ষেত্রে চাকরি এবং বাংলাদেশে থাকর অনুমতিপত্র দেখাতে হয়।
ভিসা ফি:
• বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে ৩,১০০ টাকা,
• চীনা পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে ৩,৩০০ টাকা,
• ভারতীয় পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে ৩,৮০০ টাকা,
• অন্যান্য দেশের পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে, ৩,১০০ টাকা।
ভিসার আবেদন পত্র সকাল ৮টা ৪৫মিনিট থেকে ১০টা ৩০ মিনিট এই সময়ের মধ্যে জমা দিতে হয়। আবেদনের ১০ থেকে ১২ দিন পর সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া যে কেনো দিন দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে নিয়ে আসতে পারবেন।
সূত্রঃ অর্থসূচক