পদ্মার পাড়ে গড়ে উঠবে আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া কমপ্লেক্স! শুধু সাউথ এশিয়ান গেমস নয়, কমনওয়েলথ গেমস এবং এশিয়ান গেমসেরও আয়োজন করার সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে এ কমপ্লেক্সে।

একশ’ একর জমিতে এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে সাতশ’ কোটি টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প অনুমোদন হলে বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।

chardike-ad

padmaপ্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা বাজেটে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুকে ঘিরে সিঙ্গাপুরের মতো আধুনিক শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পদ্মার পাড়ে একটি আন্তর্জাতিকমানের ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

স্থান নির্ধারণ করতে সোমবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব শিবনাথ রায়, পরিচালক (ক্রীড়া) নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ ও পরিচালক (উন্নয়ন) রেজাউল করিম মোস্তফা মাদারীপুরের শিবচরে গিয়েছিলেন। মাদারীপুরে দুটি ও শ্রীনগরে একটি স্থান প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করেছেন এই তিন কর্মকর্তা।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্রীড়া কমপ্লেক্সে একটি করে ক্রিকেট, ফুটবল ও হকি স্টেডিয়াম, ইনডোর জিমনেশিয়াম, অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক, সুইমিংপুল, টেনিস কমপ্লেক্স, শুটিং রেঞ্জ, উডেন ফ্লোর জিমনেশিয়াম ও বাস্কেটবল গ্রাউন্ড থাকবে।

এ কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যাবে। মূল ভেন্যুর সঙ্গে একাধিক অনুশীলন মাঠও থাকবে। প্রায় তিন হাজার ক্রীড়াবিদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে অত্যাধুনিক ডরমেটরি নির্মাণের মাধ্যমে। মিডিয়া সেন্টার, অতিথিদের জন্য আবাসিক হোটেল, বোট হাউস থাকবে কমপ্লেক্সে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় মনে করে, বর্তমানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া উৎসব আয়োজনের তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। জোড়াতালি দিয়ে চলছে দেশের ক্রীড়া স্থাপনাগুলো। কমনওয়েলথ কিংবা এশিয়ান গেমসের মতো বড় ক্রীড়া আসরের আয়োজন করতে হলে প্রয়োজন অত্যাধুনিক ভেন্যু ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ডরমেটরি।

এসব দিক বিবেচনা করে এই কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, স্থান নির্ধারণসহ পুরো কমপ্লেক্সের নকশা তৈরি করে প্রকল্প প্রস্তাবনা অতি দ্রুত পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।

ক্রীড়া কমপ্লেক্সের নকশা তৈরিতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে কারিগরি সহায়তা নেওয়ার ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করা হবে। এক্ষেত্রে জাপান হতে পারে প্রথম পছন্দ।

সম্প্রতি জাপানের যুব ও ক্রীড়া সংক্রান্ত ভাইস মিনিস্টার বাংলাদেশ সফরে এসে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে গেছেন।

জাপান বাংলাদেশকে আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন সহযোগিতা করবে। ওই প্রকল্পের মধ্যে এই অত্যাধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

বিদেশি সহযোগিতা না পেলে স্থানীয়ভাবেই কমপ্লেক্সের ব্যয় নির্বাহ করা হবে। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের পুরো প্রকল্প নির্মাণে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অর্থবছর থেকেই প্রকল্পের জন্য জাতীয় বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারের শীর্ষমহলের সবুজ সংকেত রয়েছে।