প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলায় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সুসমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, “বিশ্ব আজ যে বহুমাত্রিক সন্ত্রাসী হুমকির সম্মুখীন, তা কোন দেশের পক্ষে এককভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এদেরকে মোকাবেলার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে একে অন্যের সাথে সহযোগিতা ও সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।” খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে হোটেল রেডিসনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গোয়েন্দা প্রধানদের ৭ম সম্মেলন (এপিআইসিসি) উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। পাঁচদিনের এ সম্মেলনে ২৭টি দেশের গোয়েন্দা প্রধানগণ অংশ নিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীরা তাদের টিকে থাকার জন্য সবসময়ই উদ্ভাবনী শক্তিতে খুবই তৎপর। যখনই তাদের কোন একটা কর্মকৌশল উদঘাটিত হয়, সাথে সাথে তারা নতুন কৌশলের উদ্ভাবন ঘটায়। সুতরাং এটি সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জিং মিশন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এ ধরনের সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে দেশে উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঘটছে।
তিনি বলেন, এসব জঙ্গিগোষ্ঠী সাধারণ মানুষের জানমালের পাশাপাশি বিশ্বশান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশ্বশান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠীর মোকাবেলা আজ শান্তিকামী জনগণের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। শেখ হাসিনা বলেন, ভয়াবহ রক্তপাতের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের জনগণ সব সময়ই শান্তির পক্ষে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা, দেখা গেছে জঙ্গিবাদ বিস্তারের পেছনে অনেক রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে।
সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শান্তি রক্ষায় এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সকল আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চুক্তিনামা ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগের সক্রিয় অংশীদার।
তিনি বলেন, এসবের পাশাপাশি, দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেরায় প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিজ (ডিআইএ)’এর পরিচালক ডগলাস এইচ ওয়াইজ এবং ডাইরক্টর্টে জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টিলিজেন্স (ডিজিএফআই) ’এর ডাইরেক্টর জেনারেল মেজর জেনারেল আকবর হোসেন বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যগণ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, তিনবাহিনী প্রধানগণ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কমান্ড এবং বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর যৌথভাবে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গোয়েন্দা প্রধানদের ৭ম সম্মেলন আয়োজন করে।