অর্থনৈতিক নীতিমালা নিয়ে সরকারের বিপক্ষে মন্তব্য করার পর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী আহনু মতেবু। তার সঙ্গে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী বেনোয়া আমো এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী অরেলি ফিলিপেত্তি পদত্যাগ করেছেন। খবর বিবিসি।
সম্প্রতি ব্যয়সংকোচন কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনীতি পরিচালনার ব্যাপক সমালোচনা করেন আহনু মতেবু। পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রান্সে সমাজতান্ত্রিক দলের বৈঠকে গত রোববার তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স ইউরো অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। ব্যয়সংকোচন নিয়ে জার্মানিতে যে উন্মাদনা চলছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না আমরা। এ কারণেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নাম টিকিয়ে রাখতে হলে ব্যয়সংকোচনের এসব নীতিমালার বিরুদ্ধে কথা বলার সময় এসেছে।’
সাবেক এ অর্থমন্ত্রী তখন আরো বলেছিলেন, অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার প্রধান পরিচালক ভোক্তা ব্যয়। তাই প্রেসিডেন্টকে তিনি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে মনোযোগ কিছুটা সরিয়ে তা গৃহস্থালি ব্যয়ের দিকে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
মতেবুর এ মন্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেন ওলাঁদ। তিনি প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালজকে ‘দেশ পরিচালনার দিকনির্দেশনার সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে’ এ রকম একটি নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের নির্দেশ দেন।
ব্যয়সংকোচন বিষয়ক পদক্ষেপ দেশের প্রবৃদ্ধি সংকুচিত করছে— অর্থমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যকে সীমা লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভালজ।
গত সোমবার দিন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মতেবু তার পদত্যাগের বিষয়ে বলেন, ‘ইইউকে ধ্বংস থেকে রক্ষার জন্য এ বিষয়ে কথা বলা খুবই প্রয়োজন ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম আমার মন্তব্য যদি তার প্রশাসন পরিচালনার বিপরীত হয়, তাহলে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেব।’
এদিকে প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ স্পষ্ট করে বলেছেন, অর্থনীতির এ কঠিন মুহূর্তে যারা দলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না, তাদের কোনো ক্রমেই বরদাস্ত করা হবে না।
ফ্রান্সে বর্তমানে ১০ শতাংশের উপরে বেকারত্ব রয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। প্রেসিডেন্ট ওলাঁদের গ্রহণযোগ্যতায়ও ভাটা পড়েছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, দেশটিতে প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নিচে নেমেছে। ওলাঁদ অর্থনীতির গতি ফেরাতে পারেন, এ বিষয়ে আস্থা রাখছেন ২০ শতাংশেরও কম ভোটার। এর মধ্যে নিজ দলে কোন্দলে ব্যয়সংকোচন ও কর অব্যাহতির পদক্ষেপে ভর করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট কতটা এগোতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছেই।