ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২৪৭/৭, বাংলাদেশ : ৭০/১০; ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭৭ রানে জয়ী
২০১১ বিশ্বকাপে এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বনিম্ন ৫৮ রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড করেছিল বাংলাদেশ। ’১৪ তে এসে ভারতের দ্বিতীয় সারির এক দলের সাথেও ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল সেই মিরপুর শেরেবাংলায়। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজেও এমন লজ্জাজনক পরিস্থিতির অবতারণা। তবে ৫৮ তে অলআউট না হলেও এক শ’ রানের নিচে যে ১৫ বার অলআউটের নজির রয়েছে, সেখানে আরেকটি ডিজিট যোগ হয়েছে কাল গ্রেনাডার ন্যাশনাল পার্কে। আসলে বাংলাদেশ পারছে না লজ্জাজনক ব্যাটিংয়ের উত্তরণ ঘটাতে। আগের ম্যাচে ২১৭ রান করে হেরে গিয়েছিল। এবারো হেরেছে তারা ১৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। এতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পরাস্ত হলো মুশফিকরা। আরো একটি ওয়ানডে রয়েছে। তবে সেটা শুধুই নিয়ম রক্ষার। কাল প্রথম ব্যাটিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছিল ২৪৭/৭ রান। জবাবে খেলতে নেমে ১২ রানের ওপেনিং জুটি খেলেছিল তামিম-বিজয়। এরপর বিজয়ের আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে যে সূচনা হয় তা আর সামাল দিতে পারেনি কেউই। ইমরুল কায়েস, শামসুর রহমান তো ধারাবাহিক ব্যর্থ। এরপর মুশফিকুর, মাহমুদুল্লাহ, নাসির, সোহাগ গাজী সবাই যেন ব্যাটিংও ভুলে গিয়েছিলেন। যারা টেস্ট ক্রিকেট খেলেন, তাদের তো পরিস্থিতি সামাল দিতে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয় সেটা বলে দিতে হয় না। জয় না আসুক, দাঁড়িয়ে তো বোলারদের মোকাবেলা করে লজ্জা এড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা সে লজ্জাও নিবারণ করতে ব্যর্থ। এক তামিম কিছুক্ষণ ছিলেন। বাকি স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের নামের পাশে সিঙ্গেল ডিজিট। আগের ম্যাচে যেভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এ ম্যাচেও ঠিক একই অবস্থা। বিজয়ের পর ইমরুল কায়েস নেমে ব্যর্থ এ ম্যাচেও। আগের ম্যাচে রান হওয়ায় এবার আউট রবি রামপালের বলে ১ রান করে দলীয় ২৭ রানে। শামসুর আউট হন দলীয় ৪৭ রানে। তামিম অবশ্য দাঁড়িয়ে ছিলেন এক প্রান্তে। মুশফিক কোনো রকম ৬ রান করে আউট হলেও মাহমুদুল্লাহ আউট নিজস্ব প্রথম বলে শূন্য রানে। পরপরই আউট হন ওপেনার তামিম ৩৭ করে। এরপর নাসির, মাশরাফি, আল আমিন আউট হলে ২৪.৪ ওভারে তারা অলআউট হন মাত্র ৭০ রানে। শুধু ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলারদেরই নয়, স্পিন বোলিংও সামলাতে ব্যর্থ হয়ে একের পর এক লজ্জাজনক আউট হন তারা। সিরিজটাতেও হেরেছে তারা ২-০তে। নারিন ও কেমার রোচ নেন তিনটি করে উইকেট। রামপাল নিয়েছেন দু’টি। বাংলাদেশ ইনিংসে শুধু তামিম করেছিলেন ৩৭ রান। আর কেউই যেতে পারেনি ডাবল ডিজিটে।
এর আগে গ্রানাডার ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং করতে দেয় মুশফিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। প্রথম ওয়ানডের মতোই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরাও স্ট্রাগল করে এ ম্যাচে। বিশেষ করে ওয়ানডের যে ব্যাটিং সেটা করা সম্ভব হয়নি। ক্রিস গেইল, ড্যারেন ব্রাভোর দুই হাফ সেঞ্চুরি ছাড়া সেভাবে বড় স্কোর করতে পারেননি আর কেউই। এ ছাড়া লেন্ডি সিমন্সের ৪০ রান উল্লেখযোগ্য। গেইল ৫৮ রান করেন ৬৭ বলে। যার মধ্যে পাঁচটি ছক্কা ও তিনটি বাউন্ডারি থাকলেও রানের চেয়ে বেশি বল খেলার অর্থই বাংলাদেশী বোলারদের ঠিকমতো খেলতে পারছিলেন না। মাহমুদুল্লাহর বলে আউট হওয়ার আগে দুইবার তার বিরুদ্ধে বড় আপিল হয়। দু’টিই রিভিউয়ে বেঁচে যান তিনি। একবার বাংলাদেশ ও অন্যবার আম্পায়ারের আউটের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়ে টিকে থাকেন ক্রিজে। ৬১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে আউট হন মাহমুদুল্লাহকে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে, যা-ও ধরেন সোহাগ গাজী। বাংলাদেশের বিপক্ষে গেইলকে বেশির ভাগ সময় আউট হতে হয়েছে মাশরাফি বা গাজীর বলে। এবারো ক্যাচটি ধরে আউটের অংশবিশেষ হয়েই থাকলেন গাজী। এ ছাড়া সূচনায় ক্রিক এ্যাডওয়ার্ড আউট হলে ব্রাভো দীর্ঘক্ষণ টিকে ৫৩ করেন ৮২ বলে। বল হাতে মাশরাফি এ ম্যাচেও সফল। নেন তিনি তিন উইকেট। এ ছাড়া আল আমিন নেন দুই উইকেট। এ ছাড়া মাহমুদুল্লাহ ও গাজী নেন একটি করে উইকেট।