ঈদুল ফিতরের পর থেকে ‘অবৈধ’ সরকারের পতন দাবীতে জোরদার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত কিছুটা পিছু হটে ‘ধীরে চলো’ নীতিতে অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। পবিত্র হজ্ব, ঈদুল আযহা ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার মতো উপলক্ষগুলোকে সামনে রেখে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনাপূর্বক আপাতত কোন ‘কঠিন’ কর্মসূচী দিচ্ছে না দলটি। এর পরিবর্তে সরকারকে আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সময় বেঁধে দিয়ে নিয়মিত সভা-সমাবেশে নেতাকর্মীদের চাঙা করতে চাইছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। ঈদুল আযহার আগে সরকারের তরফে ইতিবাচক সাড়া না আসলে ঈদের পর সরকার হটানোর চূড়ান্ত আন্দোলনে যাবে ২০ দলীয় জোট।
এছাড়াও মাস দুয়েকের এই সময়টুকুতে কূটনৈতিক পাড়ায় যোগাযোগটাও একটু বাড়ানোর চেষ্টা চলবে বিএনপির তরফে। ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে অধিকাংশ কূটনীতিকের অমত থাকলেও নির্বাচনের পর থেকে একে একে প্রায় সবক’টি গুরুত্বপূর্ণ বিদেশী রাষ্ট্রই দ্বিতীয় মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে ফেলেছে। এ অবস্থায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক একটু একটু করে সুর বদলাচ্ছেন বাংলাদেশে সেসব রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও। অবস্থান বদলানোর কৈফিয়ত হিসেবেই হয়তো তাঁরা বিভিন্ন তরফে ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি জোটের সহিংস আচরণের সমালোচনা করছেন।
এ অবস্থায় বিএনপির নীতিনির্ধারক মহল চাইছে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে প্রভাবশালী বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের দূতদের কাছে এই বার্তা পৌঁছানো যে পরিস্থিতির দাবীতে সহিংস হলেও বিএনপি জোট দীর্ঘমেয়াদে এ ধরনের রাজনীতির চর্চায় মোটেও আগ্রহী নয়। এছাড়া সরকারকে আলোচনায় বসতে রাজী করানোর জন্যেও কূটনীতিকদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করা হবে।
বিএনপি সবসময়ই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী- এমন দাবী করে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, “জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সরকারকে দাবী মানতে বাধ্য করা হবে।” দিনক্ষণ ঠিক না হলেও চলতি আগস্টেই জোট নিয়ে ‘গা গরম’ করতে মাঠে নামবে বিএনপ।
দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “দু’ একদিনের মধ্যেই বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বৈঠকে বসবেন। সেখান থেকেই আন্দোলনের কর্মসুচী চূড়ান্ত করা হবে।”