ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধে ট্রাম্পের নির্দেশ আটকে দিলেন বিচারক

 

chardike-ad

ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ) ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত অন্যান্য গণমাধ্যম পুনরায় চালুর নির্দেশ দিয়েছেন এক মার্কিন বিচারক। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনকে এ গণমাধ্যমগুলোর কর্মীদের চাকরীতে পুনর্বহাল ও অর্থায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এগুলো বন্ধ করার চেষ্টা আইন ও সংবিধানের লঙ্ঘন। খবর বিবিসির।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদেশে ভয়েস অব আমেরিকার ১,৩০০ কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে পরবর্তীকে এক হাজার সাংবাদিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেসময় হোয়াইট হাউস এই সংবাদমাধ্যমকে ‘অ্যান্টি-ট্রাম্প’ (ট্রাম্পবিরোধী) এবং ‘চরমপন্থি’ বলে অভিযুক্ত করেছিল।

ভয়েস অব আমেরিকা মূলত একটি রেডিও সার্ভিস। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি প্রচারণার (প্রোপাগান্ডা) বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার চালানোর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখন এটি একটি বড় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পরিণত হয়েছে।

বিচারকের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এই চাকরিচ্যুত করা ও অর্থায়ন বন্ধের কারণে ভিওএ তার ৮০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো খবর প্রচার করতে পারছে না।

বিচারক রয়েস ল্যামবার্থ বলেন, প্রশাসন কোনো রকম চিন্তা না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে কর্মী, চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী, সাংবাদিক এবং সারা বিশ্বের সংবাদ পাঠকদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।

তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ জারির আগের অবস্থায় সকল কর্মী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের ফিরিয়ে নিতে হবে। একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রেডিও ফ্রি এশিয়া ও মিডল ইস্ট ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্কসের ক্ষেত্রেও।

বিচারক আরও বলেন, প্রশাসন সম্ভবত আন্তর্জাতিক সম্প্রচার আইন (ইন্টারন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং অ্যাক্ট) এবং কংগ্রেসের অর্থ বরাদ্দের ক্ষমতাও লঙ্ঘন করেছে।

ভয়েস অব আমেরিকার হোয়াইট হাউস বিষয়ক ব্যুরোর প্রধান ও মামলার প্রধান বাদী প্যাটসি উইডাকুসওয়ারা বলেন, “আমি এবং আমার সহকর্মীরা এই রায়ের জন্য কৃতজ্ঞ। তবে আমরা জানি, এটা কেবল সামান্য এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া মাত্র, কারণ সরকার সম্ভবত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে।”

প্যাটসি উইডাকুসওয়ারা আরও বলেন, “আমরা আমাদের এই লড়াই চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা মনে করি, প্রশাসন বেআইনিভাবে ভয়েস অব আমেরিকাকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছে। আমরা চাই আমরা যেন আবার আমাদের কংগ্রেশনাল দায়িত্বে ফিরতে পারি। আমরা আবারও যাতে সত্য, নিরপেক্ষ এবং পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমেরিকার গল্প তুলে ধরতে পারি।”

ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ভয়েস অব আমেরিকার সমালোচনা করে আসছিলেন। তিনি প্রায়ই মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযুক্ত করতেন।

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আবারো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, ট্রাম্প ভিওএ-এর পরিচালনার জন্য তাঁর রাজনৈতিক মিত্র ক্যারি লেককে নিয়োগ দেন। ক্যারি লেক এর আগেও, ২০২০ সালের নির্বাচন ট্রাম্পের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, এ দাবিকে সমর্থন করে গেছেন।