ইইউ’র ‘সাস্টেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্স’ দুই বছর পেছাল, স্বস্তিতে পোশাক খাত

 

chardike-ad

ইউরোপীয় কমিশন কর্পোরেট সাস্টেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্স ডিরেকটিভ (সিএসডিডিডি) বাস্তবায়নের সময়সীমা দুই বছর পেছানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

এই প্রস্তাব অনুযায়ী, কোম্পানির আকারের ওপর নির্ভর করে ২০২৮ বা ২০২৯ সালে এটি কার্যকর হতে পারে। ইউরোপীয় কমিশনের বৃহত্তর ‘ওমনিবাস ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইইউ সদস্য দেশ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিবেশ ও মানবাধিকার সংক্রান্ত কঠোর দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় দেওয়া এই বিলম্বের উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত, বিশেষ করে ইউরোপে রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের জন্য এই বিলম্ব স্বস্তির খবর হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘এই বিরতির ফলে আমাদের সদস্য কারখানাগুলো মানবাধিকার ও পরিবেশ সংক্রান্ত সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতির সুযোগ পাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সামাজিক ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতা বজায় রাখা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বাড়তি সময় শিল্পখাতকে আরও সংগঠিত হতে সহায়তা করবে।’

যদিও নির্দেশিকার বিষয়বস্তু বর্তমানে পর্যালোচনাধীন রয়েছে।

তবে ইইউ’র আইন প্রণেতারা জোর দিয়ে বলেছেন, মূল খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত মৌলিক নীতিমালা এবং সুরক্ষার বিষয়াবলী বজায় রাখা হবে।

২০২৬ সালের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে সংশোধিত নির্দেশনার বিষয়ে একটি চূড়ান্ত চুক্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া, নবনির্বাচিত জার্মান সরকার আসন্ন ইইউ সিএসডিডিডি-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যমান সাপ্লাই চেইন ডিউ ডিলিজেন্স অ্যাক্ট (এলকেএসজি) – সংশোধনের পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

এই মধ্যবর্তী সময়ে জার্মানি এলকেএসজি -এর রিপোর্টিং বাধ্যবাধকতা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার পরিকল্পনা করেছে। তবে এই সময়ে মূল ডিউ ডিলিজেন্স (দায়বদ্ধতা) সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা কার্যকর থাকবে, তবে শাস্তির পরিধি কেবল গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সীমিত থাকবে।

বিকেএমইএ’র এহসান ইইউর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ এবং জার্মানির আইনগত সামঞ্জস্যতার কৌশলকেস্বাগত জানান।

তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ক্রেতাদের ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশা পূরণে আমরা আমাদের রপ্তানিকারকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সিএসডিডিডিবাস্তবায়নের সময়সীমা পেছানোয় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও জুতা রপ্তানিকারকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই আইন সব ইউরোপের দেশের জন্য এক রকম হবে, তাই সবাইকে একই নিয়ম মানতে হবে। তাই বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা নিজেদের ভালোভাবে তৈরি করার জন্য একটু বেশি সময় পাচ্ছেন।

এই বাড়তি সময়ের মধ্যে তারা যেমন ইউরোপের নিয়ম মেনে চলার প্রস্তুতি নিতে পারবে, তেমনই দেশের ভিতরে যে টেকসই (পরিবেশবান্ধব) ও নৈতিকতার (সততার সঙ্গে ব্যবসা) পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর সঙ্গেও নিজেদের কাজের সামঞ্জস্য করতে পারবে। এতে ভবিষ্যতে ইউরোপে পণ্য রপ্তানিতে সুবিধা হবে।