মিরপুরের ঝুট ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান ওরফে সুজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার রাজধানীর মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ ও পুলিশ সোর্স নাসিমকে আরও চার দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে প্রথম দফায় জাহিদকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে আজ বুধবার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্যরা এসআই জাহিদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানান। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মিজানুর রহমান চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৭ জুলাই মিরপুর থানার এসআই রাকিব বাদী হয়ে সকাল ১০টার দিকে এসআই জাহিদসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে। মামলার অপর আসামিরা হলেন- মিরপুর থানার এএসআই রাজকুমার, কনস্টেবল আনোয়ার ও রাশিদুল হক এবং পুলিশ সোর্স পলাশ, ফয়সাল ও খোকন। এরা সবাই পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় সুজনের স্ত্রী মমতাজ সুলতানা লুসিও ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেন, যাতে মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দিনকেও আসামি করা হয়। ওই মামলায় ওসিসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।এসআই জাহিদকে ১৬ জুলাই ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে ১৫ জুলাই সুজন নির্যাতনে মৃত্যুর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের হাতে পৌঁছায়। প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে হোমিসাইডের (হত্যাজনিত) কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরই বুধবার রাজধানীর রূপনগর থেকে এসআই জাহিদকে আটক করা হয়।
এদিকে জাহিদের বিরুদ্ধে চলতি বছরে ৩ জনকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। তবে পুলিশ এসব অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করেছে। সবশেষ মিরপুর থানায় কর্মরত অবস্থায় ১২ জুলাই (শনিবার) রাতে জাহিদের হেফাজতে মাহবুবুর রহমান সুজন নামের এক ঝুট ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। নিহত সুজনের পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতন করে সুজনকে হত্যা করেছে এসআই জাহিদ। সুরতহাল রিপোর্টেও নির্যাতনে সুজনের মৃত্যুর বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ঘটনায় ওইদিনই এসআই জাহিদকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া ২৪ জানুয়ারি এসআই জাহিদ মিরপুরের কালশী বিহারি ক্যাম্পে জাবেদ নামে এক বিহারি যুবককে গুলি করে হত্যা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ১৫ দিন পর ৯ ফেব্রুয়ারি মো. জনি নামে অপর এক বিহারি যুবককে তুচ্ছ ঘটনায় আটক করে থানা হাজতে নির্যাতনে হত্যা করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এসআই জাহিদ ওই সময় পল্লবী থানায় কর্মরত ছিলেন। ওই ঘটনার পর তাকে প্রত্যাহার করা হলেও পরে তাকে মিরপুর থানায় সংযুক্ত করা হয়।