ঢাকায় অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে এ সতর্কতা জারি করে।
মার্কিন দূতাবাস জানায়, গাজা সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকা এবং সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে এবং কেন্দ্রীয় গণবিক্ষোভে পরিণত হবে। সম্ভাব্য যানজট বৃদ্ধি এবং দূতাবাসে প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে আন্দোলনের কারণে মার্কিন দূতাবাস এদিন বিকেলের জনসেবা সীমিত করবে। এ অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
বিবৃতিতে দূতাবাস আরও জানানো হয়, মনে রাখতে হবে, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করা হলেও তা সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে এবং সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। এ অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস। মার্কিন নাগরিকদের বিক্ষোভ এলাকাটি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ‘নো-ওয়ার্ক নো-স্কুল’ কর্মসূচি পালন করায় উত্তাল হয়ে উঠছে ঢাকা।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এতে সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ একাধিক রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। এতে একাত্মতা পোষণ করে বেশ কয়েকজন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘ফ্রম দা রিভার টু দা সি প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইস্ট টু ওয়েস্ট নো ফ্লো টু জায়োনিস্ট’, ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ইসরায়েল নিপাত যাক’; ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, আল আকসা জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, গাজায় নিরীহ শিশু, নারী এবং সাধারণ মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে, তা শুধু একটি রাজনৈতিক সংকট নয়, এটি একটি চরম মানবিক ও নৈতিক সংকট। এমনকি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, মানবিক করিডোরে হামলা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো ধ্বংসের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সভ্যতার চরম অবক্ষয়। আমরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান অমানবিক সহিংসতা, নির্বিচারে হত্যা, বোমাবর্ষণ, রাসায়নিক হামলা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তারা বলেন, আমরা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, সংগঠিত হতে এবং কার্যকর অবস্থান নিতে সর্বদা নৈতিকভাবে একতাবদ্ধ। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোই যথেষ্ট নয়, এখন সময় এসেছে রাস্তায় দাঁড়াবার, কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে মানবতার পক্ষে আওয়াজ তোলার। ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’- এর অংশ হিসেবে আমরা আজ বিশ্বের অন্যান্য সচেতন মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকালে অবস্থান নেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা, তাদের সঙ্গে প্রিন্সিপালও সংহতি জানান । এ ছাড়াও বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মার্চ ফর প্যালেস্টাইনের ডাক দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সকাল থেকে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। স্লোগান আর বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান তারা। গাজায় হামলা নিয়ে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর নীরবতার জন্য সমালোচনা করেন শিক্ষার্থীরা।