নিরাপদ চাঁদাবাজির অধিকারও চায় কেউ কেউ

 

chardike-ad

 

দেশে নিরাপদ চাঁদাবাজির অধিকারও চায় কেউ কেউ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

বুধবার (২৬ মার্চ) একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টকশোতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা বারবার কিন্তু বলি, এদেশের মানুষ বলে, জনগণ বলে আমরা একটা ভূখণ্ড পেয়েছি, একটা পতাকা পেয়েছি, একটা মানচিত্র পেয়েছি কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু আমরা কি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছি আমরা কি কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছিলাম? যখন যে সরকার এসেছে এই সরকার কি জনগণের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে তারা নিশ্চয়তা দিয়ে জনগণকে রাষ্ট্রের মালিক বানাতে পেরেছে ৫৩ বছরে। এই ৫৪ বছরে এসে কি আমরা এটা বলতে পারছি জনগণ রাষ্ট্রের মালিক হয়েছে। জনগণ রাষ্ট্রের শাসক ছিলেন তারা কি সেবক এর ভূমিকা নিতে পেরেছে। এখন তো এসে আমাদের কথা উঠেছে যে আল্লাহরওয়াস্তে আমাদের মাফ করেন আপনাদের এ সেবা আমাদের দরকার নাই। এই সেবা আমাদের প্রয়োজন নেই। যেই সেবা আমাদেরকে ছেলেদেরকে বারবার হত্যার দিকে ঠেলে দেয়। যেই সেবা আমাদেরকে আবার দখলদারিত্বের দিকে নিয়ে যায়, সেবা আমাদেরকে আবার চাঁদাবাজির দিকে ফিরিয়ে দেয়, যেই সেবা আমাদেরকে আবার সন্ত্রাস খুনির দিকে নিয়ে যায়। ওই সময়েও শহীদ পরিবার গুলোর উপরে পরবর্তীতে নির্যাতন হয়েছে আমরা তো এখনো দেখছি ২০২৪ এ শহীদ হয়েছে, তাদের পরিবারের মেয়েকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই ২০২৪ এ যখন আমরা রাজপথে কাজ করেছি, তখন তো আমরা কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করিনি আপনি জামায়াত করেন, আপনি পক্ষে, আপনি বিপক্ষে, আপনি একাত্তরের সাথে ছিলেন, না বিপক্ষে ছিলেন, এই কথা কিন্তু আমরা কেউ জানতে চাই না আমরা শুধু জানতে চাইছি আপনি ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে কিনা? আপনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিনা? দিস ইজ এনাফ। সেখানে ছাত্র, জনতা, শ্রমিক সবাই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা তো ৬ মাস যেতে না যেতেই আমরা নিজেরাই আলোচনায়।

শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মাঝে মধ্যে খুব আক্ষেপ হয় যে শেখ হাসিনার বিচার কি শেষ হয়ে গেছে? শেখ হাসিনার ১৫ বছরের তার নির্যাতনের কথা কি বলা আমাদের শেষ হয়ে গেছে? আমরা কি ওই জায়গা থেকে বের হয়ে আসছি যে এই কথাগুলো বাদ দিয়ে এখন আমাদের কথাগুলো নিয়েই কথা বলা আমরা শুরু করে দিয়েছি। এতটা উন্নতির জায়গায় কি আমরা পৌঁছে গিয়েছি। শেখ হাসিনার বিচার কি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি? আমাদের শহীদ পরিবারগুলোর আক্ষেপের জায়গাটা কি আমরা ধারণ করতে পেরেছি।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমি যদি আমাকে জিজ্ঞেস করি যে ৫ আগস্ট পরবর্তীতে বাংলাদেশে এমন কি সংস্কার হয়েছে যে সংস্কার উপরে ভিত্তি করে একটা সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা আমি এই সরকারের কাছে বা আমরা আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে আমরা করতে পারি। যেখানে একটা আইনজীবীদের নির্বাচন আমরা সুষ্ঠুভাবে করতে পারতেছি না। সেখানে নমিনেশন পেপার সাবমিট করতে দেয়া হচ্ছে না। আইনজীবীদের মত একটা সফিস্টিকেটেড প্লাটফর্মে আইনজীবীদেরকে বলা হয়েছে যে আপনার এখানে আসতে পারবে না। ভোট দেওয়ার দরকার নাই, এটা আমরা করে নেব। থানায় যদি বলা হয় যে গ্রেপ্তার করতে হইলে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে করবেন না হলে থানা ঘেরাও করা হবে। এই কার্যক্রমগুলো তো জনগণের মনের মধ্যে সংশয় তৈরি করেছে। যে আমরা প্রতিষ্ঠিত ফ্যাসিস্টদের সরিয়ে আরেকটা ফেসিস্ট এনভায়রনমেন্ট আবার ক্রিয়েট করে ফেলতেছি কিনা। সেটার জন্য তো রাজনীতিবিদ হিসেবে আমি শফিকুল ইসলাম মাসুদ আমি জামায়াত ইসলামী করি আমারও দায়বদ্ধতা আছে। কারন এইটা মোকাবেলা করার জন্য তো আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ দরকার হবে। সত্য কথা তো আমাকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বলতে হবে।

তিনি বলেন, আমি যদি বলি যে এখন নিরাপদ সড়কও চাই, আবার এটাও বলেন যে নিরাপদ চাঁদাবাজি করার অধিকারও চাই। দেখা যাচ্ছে এগুলো। এই জায়গাটা যখন তৈরি হয় তখন একাত্তরে আমরা যেমন স্বাধীনতা পতাকা মানচিত্র পাওয়ার পরে এই জাতিগতভাবে আমরা বারবার হেরেছি। আবার ঠিক চব্বিশে এসেও আমার কাছে ওই একই প্রেক্ষাপট মনে হয় যে আমরা আবার হারতে বসেছি। আবার কেউ গুজব তো বড় কথা প্র্যাকটিক্যালি কিনে সেই জায়গাটা আমাদেরকে ধারণ করা উচিত বলে আমি মনে করি ।