রাজধানীতে তাঁত বস্ত্র মেলায় বাহারি নকশার পণ্য

রাজধানীতে চলছে তাঁত বস্ত্র মেলা। বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক, গয়না, শাড়ি থেকে শুরু করে শীতলপাটিসহ বৈচিত্র্যময় সব পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে এ মেলায়। বিক্রিও হচ্ছে তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে।

chardike-ad

বিক্রেতারা জানান, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ ও পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করায় মেলায় পণ্যের দাম তুলনামূলক কম রাখা যাচ্ছে।

শাড়ি, থ্রিপিস, ওড়না, সালোয়ার, কামিজ, শিশুদের পোশাক, পাঞ্জাবি ও শার্টসহ নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে মেলায়।

রাজধানীর তেজগাঁও মনিপুরীপাড়ার জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) প্রাঙ্গণে গত ১১ মার্চ শুরু হওয়া এ মেলা চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মেলার দোকানগুলো খোলা থাকছে।

প্রায় ৩০টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পণ্য বিক্রি করছেন উদ্যোক্তারা।

মেলায় ৩৫০ টাকার তাঁতের শাড়ি থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকার জামদানি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খাদি কাপড়ের শার্ট ও ফতুয়া মিলছে ৪০০-৬০০ টাকায়, পাঞ্জাবি ৬০০-১৫০০ টাকায়, সুতি থ্রিপিস ৫০০ টাকায় এবং শিশুদের পোশাক মিলছে ৩০০-৫০০ টাকায়। কিছু স্টলে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গহনাও বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, তুলনামূলক কম দাম, বিভিন্ন রকম ডিসকাউন্ট এবং সরাসরি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনার সুযোগ থাকায় মেলায় এসে কেউ খালি হাতে ফিরছেন না। তবে দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম দেখা গেছে। অনেক স্টলেই তখন ভিড় ছিল না।

ক্রেতা রিয়াজ উদ্দিন সরকার একটি শার্ট, ফতুয়া ও পাঞ্জাবি কিনেছেন ২,১০০ টাকায়। জোবায়ের আনসারি ৭৫০ টাকায় কিনেছেন দুটি খাদি ফতুয়া। দু’জনেই বলেন, ভালো মানের ঐতিহ্যবাহী পণ্য কিনতে পেরে তারা খুশি।

ক্রিস্টেবল ফ্যাশনের উদ্যোক্তা টুহিন ডি’কোস্টা বলেন, “আমাদের শাড়ির দাম ৮৫০ থেকে ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত। সুতি, লিলেন, খাদি ও বাটিক শাড়ি বিক্রি করছি। ছেলেদের পাঞ্জাবি ৯৯৯ টাকা—যা সাধারণত ১,২০০ টাকায় বিক্রি হয়।”

সিদ্দিক সিল্ক হাউজের শাইমা আক্তার বলেন, “ভারতীয় শাড়ি বাজার দখল করছে, সরকারকে তা বন্ধ করতে হবে। কাতান বেনারসি বিক্রি করছি ৪,৫০০ টাকায়, স্কার্ট কাতান ৩,৫০০ টাকায়।”

সার্মস জামদানি হাউজ বিক্রি করছে নানা ডিজাইনের জামদানি শাড়ি। সম্পূর্ণ হাতে তৈরি এসব শাড়ির দাম ৪,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত।

তিনি জানান, সুতা, নকশা ও কারিগরদের সময় অনুযায়ী জামদানির দাম নির্ধারিত হয়—কিছু শাড়ির দাম ১,৫০,০০০ টাকাও হয়।

মেলায় ঘুরে দেখা গেছে, বাহারি ডিজাইন ও রঙের জামদানি ও সুতি শাড়িতে সাজানো স্টলগুলো ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। বিক্রেতারা আশা করছেন, রোজার শেষ দিকে ক্রেতা আরও বাড়বে এবং জমে উঠবে মেলা।

তাঁত বস্ত্র ছাড়াও মেলায় পাটপণ্যের গৃহসজ্জা সামগ্রী, বিছানার চাদর, শীতলপাটি, টেবিল রানার বিক্রি হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে উদ্যোক্তারা অংশ নিয়েছেন।

মেলায় ১৫ জন উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানসম্পন্ন সুতা কিনতে তারা সমস্যায় পড়ছেন। উদ্যোক্তা বদিউজ্জামান বলেন, “প্রয়োজনের ৬০ শতাংশ সুতা আমাদের ভারত থেকে কিনতে হচ্ছে। সরকার যেন সুলভ মূল্যে মানসম্পন্ন সুতা দেশেই সরবরাহ নিশ্চিত করে—এটাই আমাদের দাবি।”

খবর: টিবিএস