যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বিধ্বংসী টর্নেডোর আঘাতে অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মিসৌরিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। টর্নেডোর ফলে বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে এবং গাড়ি উল্টে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত এবং শনিবার (১৫ মার্চ) ভোরে ২৬টি টর্নেডো আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় মিশিগান, মিসৌরি ও ইলিনয়সহ পাঁচটি রাজ্যে ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি বাড়িঘর বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ট্র্যাকার পাওয়ারআউটেজ।
কানসাসে ধূলিঝড়ের কারণে ৫৫টিরও বেশি যানবাহনের সংঘর্ষে ৮ জন মারা গেছেন।
মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস জানিয়েছেন, রাজ্যটিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং একাধিক টর্নেডো আঘাত হেনেছে।
আবহাওয়া আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় পূর্ব লুইজিয়ানা, পশ্চিম জর্জিয়া, মধ্য টেনেসি এবং পশ্চিম ফ্লোরিডা প্যানহ্যান্ডেলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মধ্য মিসিসিপি, পূর্ব লুইজিয়ানা, পশ্চিম টেনেসি, আলাবামা ও আরকানসাসেও আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, এই বন্যাগুলো প্রাণঘাতী হতে পারে।
শনিবার রাতে আলাবামার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়।
সংস্থাটি আরও বলেছে, এই এলাকাগুলোতে একাধিক শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী টর্নেডো আঘাত হানতে পারে। পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক।
মিসৌরির গভর্নর মাইক কিহো বলেছেন, টর্নেডো ও প্রচণ্ড ঝড় রাজ্যজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং প্রাণহানি ঘটেছে।
মিসৌরির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২৫টি কাউন্টিতে ১৯টি টর্নেডো আঘাত হেনেছে। আর্কানসাসে তিনজন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় গভর্নর সারাহ হাকাবি স্যান্ডার্স সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প এবং ওকলাহোমার গভর্নর কেভিন স্টিটও তাদের রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
টেক্সাসে শুক্রবার রাতে এক ধূলিঝড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩৮টি গাড়ির সংঘর্ষ হয়েছে। ওকলাহোমায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এই ভয়ংকর ঝড়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় রাজ্যে ১০০টিরও বেশি দাবানল সৃষ্টি হয়েছে। ওকলাহোমায় ৮৪০ রোড ফায়ার নামে পরিচিত দাবানল ইতোমধ্যেই ২৭,৫০০ একর এলাকা পুড়িয়ে ফেলেছে এবং এখনও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। ওকলাহোমা ফরেস্ট্রি সার্ভিস এই অঞ্চলের জন্য ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি করেছে, যা মারাত্মক দাবানলের ইঙ্গিত দেয়।