পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া তিন সদস্যকে নিয়ে কমিশনের ভেতর এবং বাইরে তুলকালাম শুরু হয়েছে। এই তিন সদস্য ‘পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের’ সুবিধাভোগী উল্লেখ করে তাদের অব্যাহতির দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এমনকি এই তিনজনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পিএসসির কর্মকর্তারাও। গত রবিবার নতুন সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও সব মহল থেকে আপত্তি উঠায় শপথ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) তাদের শপথ হওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
অব্যাহতির দাবি ওঠা তিন সদস্য হলেন- ডা. সৈয়দা শাহিনা সোবহান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ এবং ড. মো. মিজানুর রহমান। গত ২ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক শাখা থেকে তাদের নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের পিএসসিতে নিয়োগ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক বলেন, ‘পিএসসিতে সদস্য নিয়োগ হয় সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে। নিয়োগের অনুমোদন হওয়ার পর আমরা কেবল ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপন আপলোড করি। কীভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়, এটি সরকার বলতে পারবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সদ্য পিএসসি’র সদস্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ডা. শাহীনা সোবহানের বাবা জামালপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ডা. শাহীনা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বান্ধবী। অভিযোগ রয়েছে, ডা. শাহীনা পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নানা সুবিধা ভোগ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে ড. মো. মিজানুর বিসিএস ৮৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। আওয়ামী লীগের সময়ে বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিয়াম ফাউন্ডেশনকে প্রশাসন ক্যাডারদের ‘কেন্দ্রবিন্দু’ ধরা হয়ে থাকে।
এছাড়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ ডিজিএফআইয়ের সাবেক ডিজি ছিলেন। ২০১৪-২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় ‘আয়নাঘরে’ অনেকেই বন্দি ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ। তার দাবি, ‘আওয়ামী লীগের আমলে তিনি কোনো সুবিধা নেননি। এমনকি ডিজিএফআইএর মহাপরিচালক থাকাকালীন আয়নাঘরের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। অভিযোগগুলো মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।’ অভিযোগের বিষয়ে অন্য দুই সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।