বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডনযাত্রাকে ঘিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দরের বহিরাঙ্গন এলাকার প্রবেশমুখগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান লক্ষ করা গেছে। এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড ও কুইক রেসপন্স টিমও রয়েছে।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের ৮ শতাধিক সদস্যের পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ সাদা পোশাকে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় বেগম জিয়া চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। এ সময় বিমানবন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন। খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রাকালে বিমানবন্দরের ভেতরে ও বাইরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বেবিচক।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবির ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসাজনিত কারণে রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। আমরা মনে করছি, এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরাও বিমানবন্দরে আসবেন। তাদের আসার কারণে আমাদের নিরাপত্তাজনিত কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য আমরা সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরে বাইরে ও ভেতরে যাতে তার কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ ব্যবস্থাই রয়েছে। বিমানবন্দরে আগত অন্য যাত্রীদেরও যাতে কোনও নিরাপত্তা সমস্যা না হয় সে ব্যাপারেও আমাদের সর্বোচ্চ পদক্ষেপ থাকবে।’
দেখা গেছে, বিমানবন্দরের বাইরে মূল ফটক থেকে শুরু করে পুরো এলাকা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। মূল ফটক, ডমিস্টিক টার্মিনালের প্রবেশ পথ থেকে শুরু পুরো এলাকা, বেবিচক সদর দফতর থেকে হ্যাঙ্গারগেট হয়ে পুরো এলাকা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখানে চলাচলকারী ব্যক্তিদের সন্দেহ হলে তল্লাশি করতেও দেখা যাচ্ছে। এছাড়া মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশের সব গাড়ি তল্লাশির আওতায় আনা হচ্ছে।
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে বাইরে ও ভেতরে মূলত তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অধিনায়ক সিহাব কায়সার খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকেই আমাদের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বিকাল ৪টার পর পুরো বিমানবন্দর এলাকা আমাদের সদস্যরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিয়েছে। আমাদের অতিরিক্ত সদস্যদের পাশাপাশি কুইক রেসপঞ্জ টিম, ডগ স্কোয়াড মোতায়েন রয়েছে। সন্দেহজনক হলেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করছি অসংখ্য নেতাকর্মী জড়ো হবে এই এলাকায়। বিষয়টি মাথায় রেখেই বিমানবন্দরের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। নেতাকর্মীদের কারণে যেন রাস্তায় ট্রাফিক সমস্যা না হয় তার জন্যও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের বাইরের নিরাপত্তাজনিত কোনও সমস্যা হবে। আমাদের অতিরিক্ত সদস্যের পাশাপাশি অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও মোতায়েন থাকবে।’
প্রসঙ্গত, কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’ ফ্লাইটে আজ রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চিকিৎসকদের পরামর্শে তার দেশের ফেরার তারিখ নির্ধারণ হবে।