জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির পোশাক নিয়ে শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি নবীনুর রহমান নবীনের কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১ জানুয়ারি) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রক্টর অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাকশন-অ্যাকশন, নবীন চাচ্চুর বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন; নবীন চাচ্চুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে; বয়কট-বয়কট, নবীন চাচ্চু বয়কট; বোরকার কটূক্তি, মানি না-মানবো না; নারীর পর্দার নিরাপত্তা, নিশ্চিত করো-করতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো হলো- ছাত্রদল নেতা নবীনকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে; ছাত্রদলের কোনও কমিটি দেওয়ার আগেই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে; ধর্মীয় পোশাক নিয়ে ভবিষ্যতে কেউ এমন কটূক্তি করলে হোক সে শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষক, তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে নিয়ে কটূক্তির অপরাধে নবীনের অ্যাকাডেমিক সনদপত্র অফিসিয়ালি বাতিল করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা সহকারী প্রক্টরের প্রতি কটূক্তির তীব্র নিন্দা জানান এবং অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা নবীনের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার অন্তর বলেন, ‘ধর্মীয় পোশাক বা দাড়ি-টুপি থাকলেই একটা নির্দিষ্ট অ্যাজেন্ডাতে পাঠিয়ে দেওয়ার চর্চা ৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত দেখেছি। সবাই নারী স্বাধীনতার কথা বলি আমরা। তো বোরকা পরার স্বাধীনতা কি নারীর স্বাধীনতা না? আমরা এই নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের চর্চা আর চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, সকল মত-বিশ্বাসের অংশগ্রহণে একটা সুস্থ পরিবেশের, সুস্থ শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিত হবে। আমাদের উল্লিখিত দাবির ব্যত্যয় হলে আমরা বসে থাকবো না। আমাদের স্বাধীনতার ওপর কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ আমরা মেনে নেবো না।
একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি বলেন, ‘তোমাদের (শিক্ষার্থী) দাবিগুলো আমি শুনেছি। তোমরা লিখিত আকারে অভিযোগগুলো দিলে আমরা সেটি প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেবো।’