দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়েতে যাত্রীবাহী একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৬ জনে পৌঁছেছে। আজ রোববার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় অগ্নিনির্বাপক সংস্থার বরাতে রয়টার্স ও বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
দুর্ঘটনার সময় জেজু এয়ারের উড়োজাহাজটিতে ১৭৫ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু ছিলেন। উড়োজাহাজটি থাইল্যান্ড থেকে এসে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে দুজনকে জীবিত উদ্ধারের খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদ সংস্থা ইয়নহাপ। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় ফায়ার ডিপার্টমেন্টের রেসপন্স টিম অফিসার লি হাইওন-জি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমরা এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ৮৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছি। তবে গুরুতর আহতদের কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
লি আরও বলেন, উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ বিধ্বস্ত বিমানের পেছনের অংশ থেকে যাত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছে।
যে ৮৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪৬ জন নারী, বাকি ৩৯ জন পুরুষ। এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাজধানী সিউল থেকে ২৮৮ কিলোমিটার দূরে। দুর্ঘটনার পর সেখানে সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি লিখেছে, এই দুর্ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, বিমানবন্দরে অবতরণের সময় পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, জোড়া ইঞ্জিনের উড়োজাহাজটি চাকা ছাড়াই রানওয়ে দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায়, তারপর রানওয়ে থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিমানবন্দরের দেয়ালে ধাক্কা খায়। পরে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির বিভিন্ন অংশে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।
এদিকে ইয়োনহাপ রিপোর্ট করেছে, থাইল্যান্ড থেকে ফেরার পথে বিমানটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করার সময় “পাখির সাথে সংঘর্ষের ফলে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে” দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বোয়িং কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের এভিয়েশন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে এ দুর্ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সুং-মক যথাযথভাবে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তার দপ্তর জানিয়েছে। গত শুক্রবার চোই সুং-মক দেশের অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে চোই সুং-মকের কার্যালয় জানিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন এবং জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।