ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গর্তে ঢুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা নারীর পরিচয় মিলেছে। তিনি উপজেলার হীরাপুর এলাকার নুরুল ইসলাম ব্যাপারীর স্ত্রী হরলুজা বেগম (৫০)।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীর বাজার এলাকার একটি টিনশেড ঘরে ওই নারীর মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আগুনে ওই নারীর দেহ কয়লা হয়ে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফারহান রনি নামে এক যুবককে আটক করেছে। তিনি উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার ছেলে।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহির মিয়া জানান, উপজেলার গাজীর বাজার এলাকার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে গত রাতে রাজহাঁস চুরি হয়। মঙ্গলবার সকালে হাঁস খুঁজতে এসে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার জায়গায় একটি টিনের পরিত্যক্ত ভাঙা ঘর থেকে ধোঁয়ার গন্ধ পান। এ সময় সেখানে থাকা ফারহান রনি জানান পাতা পোড়া দিচ্ছেন। এ কথায় বিশ্বাস না হলে হাঁসের মালিক দুই ভাই এনামুল, রোমান ও তাদের চাচাতো ভাই ওবায়দুল ওই ঘরে ঢোকেন। এ সময় ফারহান ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারার হুমকি দেন। এতে সন্দেহ বাড়লে গ্রামের লোকজন গিয়ে গর্তে পুড়তে থাকা লাশ দেখতে পান। পরে তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা ওবায়দুল্লাহ বলেন, লাশটি পুড়িয়ে বীভৎস করা হয়েছে। চেনার উপায় নেই এটি নারী না পুরুষের লাশ। তবে হাতে একটি চুড়ি থাকায় পুলিশ নিশ্চিত হয়েছেন নারীর লাশ।
পুলিশ দাবি করেছে, আটক রনির স্বীকারোক্তি মোতাবেক ওই নারীর বিচ্ছিন্ন মাথা মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মাথা দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছে পুলিশ। রনি ভোরে ওই নারীকে ডেকে নিয়ে যায়। তবে কী কারণে তাকে এখানে আনা হয় কিংবা কেন হত্যা করা হয়, পুলিশ বিস্তারিত জানাতে পারেনি।
ঘটনা সম্পর্কে আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর ইসলাম জানান, ভোরে ওই নারীকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তার দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। মাথা বিচ্ছিন্ন ছিল, হাতে চুড়ি থাকায় দেহটি নারীর বলে প্রথমে ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। পরে বিচ্ছিন্ন মাথা পাওয়ার পর তার পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। তবে কী কারণে ওই নারীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বীভৎসভাবে হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফারহান রনি নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে সে মাদকাসক্ত। সে উল্টাপাল্টা কথা বলছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ফারহান রনি একেক সময় একেক কথা বলছে। এ কারণে স্পষ্টভাবে সঠিক কারণ এখনই বলা যাচ্ছে না। আরও তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।