দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে গবেষণায় আগ্রহীদের অনুদান দেবে ডাটা অ্যান্ড এভিডেন্স টু অ্যান্ড এক্সট্রিম পোভার্টি (ডিপ)। ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ড নামের তহবিল থেকে বাংলাদেশি গবেষকদের স্বল্প ও মাঝারি আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে একটি উদ্বোধনী কর্মশালার মাধ্যমে ফান্ডটির উদ্বোধন করা হয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডিপ ইউনিভার্সিটি অব কর্নওয়েল, সাউদাম্পটন, কোপেনহেগেন এবং অক্সফোর্ড পলিসি ম্যানেজমেন্টের নেতৃত্বে ও বিশ্বব্যাংকের ডাটা ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের অংশীদারত্বে এটি একটি কনসোর্টিয়াম বা সংঘ।
যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট অফিসের অর্থায়নে কনসোর্টিয়ামটি পরিচালিত হচ্ছে। ডিপ বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রমাণ, বিশ্লেষণ এবং সমাধান দিয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ড বাংলাদেশ-এর লক্ষ্য বাংলাদেশি গবেষকদের দারিদ্র্য দূরীকরণের বিষয়ে গবেষণায় উৎসাহিত করা, যা দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়ে তথ্য এবং উপাত্তের ঘাটতি দূর করবে এবং এসব তথ্য ও উপাত্ত ব্যবহার করে দেশে নীতিনির্ধারকদের দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়ক জাতীয় নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা, যাতে একটি সমন্বিত ও কার্যকর উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করে মানুষের জীবনমান উন্নত করা যায়।
ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ড বাংলাদেশ দেশের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ড বাংলাদেশের স্টেয়ারিং কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. জুলফিকার আলী।
এ ছাড়াও সদস্য হিসেবে আছেন- ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং সানেম নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মুনিরা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ প্রফেসর ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর প্রমুখ।
উদ্বোধনী কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণা পরিচালক ড. জুলফিকার আলী। কর্মশালার শুরুতে ডিপ-এর কর্মকর্তা ও স্টেয়ারিং কমিটির মেম্বাররা ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ডের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোচনা করেন।
অক্সফোর্ড পলিসি ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে প্রেজেন্টেশন দেন কনসালটেন্ট আদিবা খালেদ, প্রিন্সিপাল ইকোনমিস্ট ওমার সালাম, প্রজেক্ট ম্যানেজার জেমি উইলিয়াম।
বক্তারা দারিদ্র্য দূরীকরণে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। ঢাকার বাইরের গবেষকদের মাঝে ফান্ডটিকে পরিচিত করার জন্য আগামী ১২ তারিখ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে জুলফিকার আলী বলেন, আমরা জানি বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আমরা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার ও নীতিগত পরিবর্তনের কথা আলোচনা করছি। তাই এই মুহূর্তে এমন গবেষণা প্রজেক্ট খুবই সময়োপযোগী। এসব গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য আমদের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে কাজে লাগবে।
ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ডের প্রজেক্ট ম্যানেজার জেমি উইলিয়ামস বলেন, আমরা তথ্য ও উপাত্তের স্বল্পতা দূর করে, দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য যাতে একটি কার্যকর জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়, সে ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের সহায়তা করতে চাই। ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ডের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশি গবেষকদের সে সব বিষয়ে গবেষণায় উৎসাহিত করতে চাই, যা এর আগে গবেষণায় উঠে আসেনি।
ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ডের জন্য চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা একজন গবেষক বা সম্মলিতভাবে কয়েকজন গবেষক আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের যোগ্যতার ভিত্তিতে ফান্ড দেওয়া হবে। ডিপ চ্যালেঞ্জ ফান্ড বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার, তানজানিয়া, ইথিওপিয়া, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক এবং নাইজেরিয়াতে দারিদ্র্য দূরীকরণে স্থানীয় গবেষকদের সহায়তা দেবে।