সম্প্রতি চট্টগ্রামকে নিজেদের দাবি করে দখলের হুমকির প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনাদের উদ্দেশ্য ভয়ংকর খারাপ। আপনারা যদি চট্টগ্রামের দিকে তাকান, আমরা কী আমলকী মুখে দিয়ে চুষবো। তা তো আমরা চুষবো না।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে ‘দেশীয় পণ্য কিনে হন ধন্য’ শীর্ষক দেশীয় পণ্য কম দামে বিক্রি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ও চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে ভারতীয় বিতর্কিত সাংবাদিক ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে তীব্র সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ভারতের এক নেতা এক পর্যায়ে বলেছেন, ‘এবার চট্টগ্রাম দাবি করব।’ আপনাদের উদ্দেশ্য ভয়ংকর খারাপ। আপনারা যদি চট্টগ্রাম দাবি করেন, আমরা নবাবের যে অংশ অর্থাৎ বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, সেটা আমাদের দাবি করব। এটাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত না কী গোস্যা হয়েছেন। কষ্ট পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যদি আসে দখল করতে, আমরা কী বসে বসে ললিপপ খাবো’। আমি তার উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা যদি চট্টগ্রামের দিকে তাকান, আমরা কী আমলকী মুখে দিয়ে চুষবো। তা তো আমরা চুষবো না।
তিনি বলেন, আমরা নিজের পায়ের উপর দাঁড়াব। আমরা ভারতীয় শাল নিব না। এই দেখেন বাংলাদেশের খদ্দর শাল। শীত যাচ্ছে না। রাজশাহীতে শীত তো বেশি। তারপরও পরে এসেছি। এই পরেই আমরা জীবন যাপন করছি, আগেও করেছি। ছোটবেলা থেকেই পরেছি। মাঝখানে গ্লোবালাইজেশন হয়েছে, ভারতীয় পণ্য আসছে। কিন্তু তারা তাদের পণ্য নিয়ে গর্ব করে। আমরা আমাদের পণ্য নিয়ে গর্ব করবো না? আমরা আমাদের বিখ্যাত রাজশাহী সিল্ক, টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমার খালির লুঙ্গি-গামছা, পাবনা-সিরাজগঞ্জের তাঁতের শাড়ি, সব আছে। আমরা ভারতীয় পণ্য এ জন্যই বর্জন করছি যে, তারা এই দেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করেনি। তাদের বন্ধুত্ব শুধু শেখ হাসিনার সাথে।
রিজভি বলেন, ভারত সব সময় মনে করে বাংলাদেশ তাদের তাঁবেদার হয়ে থাকবে। এ কারণেই আপানারা শেখ হাসিনাকে অত্যন্ত প্রিয়পাত্র মনে করেন। শেখ হাসিনা এখন যেহেতু পালিয়ে গেছে এই মনঃকষ্টে ভারতের শাসকগোষ্ঠী সবাই মন খারাপ করে বসে আছেন। এজন্য এই অপতথ্য-অপপ্রচার তারা চালাচ্ছেন। এটি করে কোনো লাভ হবে না।
রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, এরা (আওয়ামী লীগ) বাচ্চা শিশুদের হত্যা করেছে ক্ষমতায় থাকার জন্য। তারা আবু সাঈদকে হত্যা করেছে, মুগ্ধকে আমরা দেখেছি। এত আত্মদান শুধু গণতন্ত্রের জন্য। আমাদের চূড়ান্ত গণতন্ত্র এখনো অর্জন হয়নি। আমাদের চূড়ান্ত গণতন্ত্র অর্জন করতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জানগণ যাকে ভোট দেবে তারাই রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবে। এভাবেই এই দেশে ফ্যাসিবাদী যাতে কখনো আবার ফিরে না আসে এ লক্ষ্যে আমরা সবাই মিলে কাজ করব।
বক্তব্য শেষে রিজভী ভারতীয় একটি বিছানার চাদর মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় বিএনপির কর্মীরা সেটিতে আগুন দেন। পরে তিনি দেশীয় একশ টাকায় লুঙ্গি, দুশ টাকায় শাড়ি ও ইত্যাদি দেশীয় পণ্য বিক্রি করেন।
রাজশাহী নগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহ খালিদ হাসান চৌধুরী পাইন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।