যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করলেই সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্বপ্রাপ্ত হবে। নাগরিকত্বের এমনই আইন বা বিধি এতদিন প্রচলিত ছিল দেশটিতে। তবে এবার সেই নিয়ম বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তথাকথিত জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধান বাতিল করার পরিকল্পনা করছেন। এই নীতির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া যে কেউ, তার বাবা-মা অন্য দেশে জন্মগ্রহণ করলেও মার্কিন পাসপোর্ট পেয়ে থাকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, এই নিয়ম বদলাতে হবে। যদি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিয়ম রাখা হয় তাহলে অভিবাসনপ্রত্যাশী অনেক পরিবারের সন্তানদের রেখে তাদের বাবা-মাকে ফেরত পাঠাতে হবে। আমি পরিবারগুলোকে আলাদা করতে চাই না। কাজেই পরিবার না ভাঙার একমাত্র উপায় হলো তাদের সবাইকে একসঙ্গে ফেরত পাঠানো।
জন্মগত নাগরিকত্বের বিধানটি মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ‘জন্মগ্রহণকারী সব ব্যক্তিই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক’। তবে ট্রাম্প তার অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের জন্য এই নিয়ম পাল্টাতে চান।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবীরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ হবে মার্কিন সংবিধানবিরোধী এবং যদি ক্ষমতা গ্রহণের পর সত্যিই এটি কার্যকর হয়, তাহলে সংবিধান লঙ্ঘনের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটবে।
উল্লেখ্য, মার্কিন নাগরিকত্ব-গ্রিনকার্ড অর্জনের একটি সহজ এবং জনপ্রিয় পথ হচ্ছে মার্কিন ভূখণ্ডে সন্তান জন্মদান। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, কোনো শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয় এবং ওই শিশুর বয়স ১৮ পার হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে বড় করা এবং দেখাশোনা করার জন্য তার বাবা-মাকে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়।
আর একবার বৈধ বসবাসের অনুমতি পেলে নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির পথও অনেক সহজ হয়। ফলে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বৈধ নথিবিহীন অভিবাসীদের জন্য বড় ধরনের বিপদ তৈরি করতে পারে।