বিদ্রোহীদের রাজধানী দামেস্ক দখলের ঘোষণার মুখে সিরিয়া ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি দায়িত্ব পালন করবে।
এরইমধ্যে আল-জালালি রোববার বলেছেন, তিনি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোন নেতৃত্ব এবং হস্তান্তর প্রক্রিয়ার জন্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর।
জালালি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই দেশটি একটি স্বাভাবিক দেশ হতে পারে যেটি তার প্রতিবেশী এবং বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে… তবে এই ইস্যুটি সিরিয়ার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বের উপর নির্ভর করে। আমরা এটিকে (সেই নেতৃত্বকে) সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। ’
এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত সিরিয়ার সরকারি শাসনভার প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।
তিনি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্কের সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে।
টেলিগ্রামে একটি বিবৃতিতে বিদ্রোহীদের এই শীর্ষনেতা বলেন, দামেস্ক শহরের সব সামরিক বাহিনীর জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, যেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে।
একইসঙ্গে উন্মুক্ত আকাশে গুলি করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।
২০১১ সালে আরব বসন্তের জের ধরে সিরিয়ার বিক্ষোভ শুরু হয়। ক্রমে তা রুপ নেয় গৃহযুদ্ধে। রাশিয়া আর ইরানের সমর্থনপুষ্ট বাশার আল আসাদ নিজের ক্ষমতা অনেকটা সংহত করে রাখতে পেরেছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া নতুন লড়াইয়ে একের পর এক বড় বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায় সরকারি বাহিনী।
রোববার বিদ্রোহী দলগুলো টেলিগ্রাম বার্তায় জানায়, ‘বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছরের নিপীড়নের পরে, এবং ১৩ বছরের অপরাধ ও অত্যাচার এবং (জোর করে) বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর… আমরা আজ এই অন্ধকার সময়ের অবসান এবং সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করছি।’
দুই সিনিয়র সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধ ছাড়াই রাজধানীতে প্রবেশ করেছে। হাজার হাজার গাড়িতে এবং পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে স্বাধীনতা স্লোগান দিচ্ছিল।
বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছে, তারা রাজধানীর উত্তরে কুখ্যাত সাইদনায়া সামরিক কারাগারে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে তাদের বন্দিদের মুক্ত করেছে।
শুধু তাই নয়, বিদ্রোহীদের আগমনের খবরে সিরিয়ার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনী দামেস্ক বিমানবন্দর ত্যাগ করে পালিয়ে গেছে।