ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার একটি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মংলারগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক জানান।
এ ঘটনায় পুলিশ মংলারগাও গ্রামের প্রফুল্ল দাসের ছেলে আকাশ দাসকে (২০) আটক করেছে; যার বিরুদ্ধে আরেকজনের ফেইসবুক পোস্টে গিয়ে ধর্মকে অবমাননা করে কমেন্ট করার অভিযোগ তুলেছে এলাকার কিছু লোকজন।
সুনামগঞ্জ জেলার ডিসি মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া ওই গ্রামে পরিস্থিতি শান্ত থাকার কথা তুলে ধরে বলেন, “তেমন কিছু হয়নি। প্রশাসনের নজরদারিতে আছে পুরো বিষয়টি।”
তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়।
রাত দেড়টার পর দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহের নিগার তনু বলেন, “পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহলে রয়েছেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
“উত্তোজিত জনতা ওই যুবকের বাড়িতে গিয়েছিলেন, তখন কিছু ভাঙচুর হয়েছে। তবে কোনো মন্দির ভাঙচুর করা হয়নি। বাড়িঘর ও দোকানপাট কিছু ভাঙচুর হয়েছে। আমি আবার সকালে গিয়ে সবকিছু দেখব।”
সুরমা নদীর এপারের গ্রাম মংলারগাঁও এবং ওপারের গ্রাম ঢোলপুষি। ঢোলপুষি গ্রামের দুজন বাসিন্দা রাতে বলেন, মংলারগাঁও গ্রামের হিন্দুদের বাড়ি-দোকানপাটে হামলা, লুটপাটের খবর তাদের স্বজনদের কাছ থেকে জেনেছেন। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তারা বলেন, সন্ধ্যার পর আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কিছু উত্তেজিত জনতা মিছিল নিয়ে আকাশের শাস্তি দাবি করেন। এসময় বিক্ষুব্ধদের একটি অংশ কয়েকটি বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
কয়টি বাড়িতে হামলা হয়েছে জানতে চাইলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওসি জাহিদুল বলেন, “সেটি হিসাব করা হয়নি। ফেইসবুকে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে ঘটনটি ঘটেছে। যেহেতু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে, উত্তেজিত জনতা ওই যুবকের বাড়ি গিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আটক যুবকের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।”