উইন্ডিজদের নিজ মাঠ ইয়ার্কারে শামার জোসেফের স্টাম্প ভেঙে দিলেন নাহিদ রানা। ততক্ষণে উদযাপনে মাতোয়ারা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয় বলে কথা। তার ওপর সম্প্রতি লাল বলের ক্রিকেটের ব্যর্থতা ঘোচানো জয়ও বলা যেতে পারে। সব ছাপিয়ে রেকর্ড গড়লেন মেহেদী হাসান মিরাজরা।
জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৫ রানে গুটিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। ১০১ রানে জিতে দুই টেস্টের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল মিরাজের দল। সেই সঙ্গে জয় দিয়েই ২০২৪ সালের টেস্ট মিশন শেষ করল বাংলাদেশ।
কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই টেস্ট জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এবার উইন্ডিজের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। কিংসটনে এর আগে কোনো দল এত বড় রান তাড়া করে জেতেনি। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১৮৫ রানে।
প্রথম টেস্টে বড় হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মেহেদী মিরাজ। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তার দল। মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ওপেনার সাদমান ইসলাম দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৪৬ রানে অলআউট করে বাংলাদেশি বোলাররা। তরুণ গতিময় পেসার নাহিদ রানা ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেন। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৮ রানের ছোট লিড পেয়ে যায়।
দ্বিতীয় ইনিংসে জাকের আলীর দৃঢ়তায় ২৬৮ রান করে বাংলাদেশ। জাকের একপ্রান্ত দিয়ে ৯১ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া সাদমান ৪৬ ও মিরাজ ৪২ রান যোগ করেন। বাংলাদেশ জয়ের জন্য স্বাগতিকদের ২৮৭ রানের লক্ষ্য দেয়।
পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর হঠাৎ ছন্দপতনের শুরু বাংলাদেশের। ভারত সফর কিংবা দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ- লজ্জার পরাজয়। এরপর তো টেস্ট ক্রিকেটের আকাশে হঠাৎ জমা কালো মেঘ জমতে শুরু করে। এবার সেটার আড়ালে রক্তিম সূর্যের উঁকি…। চ্যালেঞ্জ ছাপিয়ে টেস্ট জেতা, সেটাও আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে- ১৫ বছর পর!
দেশের বাইরে এবারই প্রথম এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশিবার (৩ ম্যাচ) টেস্ট জেতার রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ। আগের রেকর্ডও ছিল ১৫ বছর আগে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে জেতা দুই টেস্ট।