আগামী ৩০ ডিসেম্বর ১১তম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পর্দা উঠতে যাচ্ছে। তার আগে আজ রবিবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে উন্মোচন করা হয়েছে টুর্নামেন্টের মাসকট।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এগারোতম আসরে ভিন্ন কিছু থাকবে, এটা আগেই ধারণা করা হচ্ছিল। সেই মোতাবেক প্রথমবারের মতো বিপিএলে যুক্ত হলো মাসকট। ‘ডানা ৩৬’ মাসকটটি- ডানা বা পাখা প্রসারিত করা একটি ‘সাদা পায়রা’ যা শান্তির প্রতীক এবং দুই পাশে ১৮টি করে মোট ৩৬টি রঙিন পালক উপস্থাপন করে ৩৬ শে জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অবিস্মরণীয় স্মৃতিকে, যা প্রতিটি স্বপ্নবাজ, উদ্যমী, অপ্রতিরোধ্য তরুণকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা যোগায়।
বাংলাদেশ ক্রীড়াঙ্গনের একঝাঁক তারকা ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ এর ঘোষণা দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তার উপস্থিতেই বিপিএলের মাসকট উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, বাফুফের নব নির্বাচিত সভাপতি তাবিথ আউয়াল, জাতীয় সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এছাড়া নারী দলের সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন, জাহানারা আলম ও বর্তমান অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া আন্দোলনের সময়কার একটি প্রামাণ্যচিত্রও তুলে ধরা হয়।
এই আয়োজন সফল করতে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মো. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থানের শোককে শক্তিতে রূপান্তরের জন্য ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত হতে যাচ্ছে তারুণ্যের উৎসব। আমরা সুখে, দুঃখে আনন্দ, বেদনায় সর্বদা গণ অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করতে চাই এবং তাদের এই ত্যাগের স্পৃহা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই। খেলাধুলা আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে। বিশেষ করে ক্রিকেট আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে। ভিন্ন ক্ষেত্রে যত মতভেদ থাকুক না কেন খেলার ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাই। জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশ পুর্নগঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে যাওয়াই এই তারুণ্যের উৎসবের অন্যতম উদ্দেশ্য। খেলাধুলাসহ নানা আয়োজনে তারুণ্যের উৎসব সারা দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’
দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এবারের বিপিএল আরও আকর্ষণীয় হতে চলেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত করেছে বিপিএলের সূচি এবং নিশ্চিত করেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের তিনটি ভেন্যু।ডিজিটাল টিকেটিং, গ্যালারিতে দর্শকদের জন্য বিনামূল্যে পানি, উন্নত প্রযুক্তি এবং অভিজ্ঞ দেশি-বিদেশি আম্পায়ারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ইতোমধ্যে জানিয়েছিলেন, এবারের বিপিএল আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও বড় সাফল্য অর্জন করার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজনের নতুনত্ব আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি আগামী ২৩ ডিসেম্বর মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে, তবে চট্টগ্রাম এবং সিলেটেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে যথাক্রমে ২৫ ও ২৭ ডিসেম্বর। এছাড়া বিপিএল চলাকালে প্রতি শুক্র ও শনিবার একটি করে ছেলেদের ৮টি ও মেয়েদের ৮টি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করা হবে। এছাড়া ‘অনূর্ধ্ব-১৫ ন্যাশনাল কাপ’ এর আয়োজন করা হবে। প্রতিভা অন্বেষণে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, আন্তঃস্কুল ও কলেজ প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, স্কিল প্রতিযোগিতা ও জুলাই-৩৬ বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই বিপিএল আসরে অংশগ্রহণ করবে ৭টি দল: ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স, রংপুর রাইডার্স এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স।