বিয়ে হলো একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়, যা মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চারিত্রিক পবিত্রতা ও নিজ বংশধারা বজায় রাখার জন্য বিয়ের বিকল্প নেই। বিয়ে করা যুবক-যুবতীদের জন্য ক্ষেত্র ভেদে ফরজ, আবার কখনো সুন্নত।
বিয়ে প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিয়ে করল সে তার অর্ধেক ইমান (দ্বীন) পূর্ণ করে ফেলল। অতএব, বাকি অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে। (বায়হাকি, শুআবুল ইমান)।
হাদিসে নববিতে এসেছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, হে যুবক সকল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম সে যেন বিয়ে করে। কারণ, বিয়ে করলে দৃষ্টিকে নিচু রাখা যায় এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করা যায়। আর যে ব্যক্তি বিয়ের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না সে যেন রোজা রাখতে থাকে। কারণ রোজা তার খাহেশকে কমিয়ে দেবে। (বুখারি, মুসলিম)।
বিয়েতে বরকত বাড়াতে চরিত্রবান নারী বা পুরুষকে জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে হবে। বিয়েতে পাত্রী পছন্দের প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে আত্মিক ও ঈমানের সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নারীদের চারটি গুণ দেখে বিয়ে করো : তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। তবে তুমি দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেবে। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৯০)
রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের নিকট কোনো পাত্র বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীনদারী ও চরিত্র তোমাদের যদি পছন্দ হয়, তাহলে তার সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন করো। অন্যথা জমিনে বড় বিপদ দেখা দেবে এবং সুদূরপ্রসারী বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৮৪-৮৫)
হজরত মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) বলেন, আমি জনৈক নারীকে বিয়ের প্রস্তাব করলাম। রাসুল (সা.) আমাকে বললেন, তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাকে দেখে নাও। কেননা এতে তোমাদের উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা জন্মাবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৩১০৭)
অন্য আরেক হাদিসে উল্লেখ আছে, এক লোক নবী করিম (সা.)-এর নিকট এসে বলল, সে আনসারি এক মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। রাসুল (সা.) বললেন, তাকে দেখেছ কি? কেননা আনসারদের চোখে দোষ থাকে। (সহিহ মুসলিম)
হাসিদগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিয়ে ক্ষেত্রে কিছু বিষয় উভয় পক্ষকে দেখে নিতে হবে। চরিত্রবান হওয়ার পাশাপাশি কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা আছে নাকি তাও জেনে নেওয়ার অধিকার অন্য পক্ষের রয়েছে।