সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ডাকা বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তান। কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ। বিক্ষোভ ঠেকাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পিটিআইয়ের পাঁচ পার্লামেন্ট সদস্যসহ প্রায় চার হাজার জনকে।
বাধা উপেক্ষা করে গতকাল সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে পৌঁছে যায় পিটিআই নেতা-কর্মীদের গাড়িবহর। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় তাদের সংঘর্ষ হয়।
ইসলামাবাদের ডি চকে জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পিটিআই নেতা-কর্মীরা। তাঁদের ঠেকাতে রাজধানীর সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুই মাসের জন্য জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত।
পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শহিদ নেওয়াজ গতকাল বলেন, পুলিশ ইতিমধ্যে ইমরান খানের চার হাজার সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যও রয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকবি বলেন, ইসলামাবাদের ‘রেড জোনে’ প্রবেশ করলে ইমরান খানের সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হবে। সরকারি ভবনের সুরক্ষায় ওই এলাকায় চলাচল নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যে কেউ ওই এলাকায় আসবেন, তাঁকেই গ্রেপ্তার করা হবে।
এর আগে গতকাল রাজধানীর উপকণ্ঠে পৌঁছাতে শুরু করে ইমরান খানের সমর্থকদের গাড়িবহর। জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাইবার-পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের নেতৃত্বে গাড়িবহর ব্রাহমা মোড়ে পৌঁছালে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
এ ছাড়া আরও কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। পাঞ্জাবে সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন বলে প্রাদেশিক তথ্যমন্ত্রী আজমা বোখারি জানিয়েছেন।
সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা চলছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলী খান বলেন, এ নিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি শিগগিরই জানানো হবে। আলোচনা চলমান।
এর আগে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন গহর খান। তিনি বলেন, পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা এই বিক্ষোভকে ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে বিক্ষোভ স্থগিত করার গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান পিটিআই চেয়ারম্যান।
অন্যদিকে ইমরান খান, তাঁর স্ত্রী বুশরাসহ পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে ফয়সালাবাদের নিশাতাবাদ থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া সৌদি আরবের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ায় গুজরানওয়ালার বিভিন্ন থানায় বুশরার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা হয়েছে।