Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান জাতীয় নাগরিক কমিটির

 

chardike-ad

 

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন নির্বাচন কমিশনকে প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংগঠনটি বলছে, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের কাছে নতি স্বীকার করে সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করতে বাধ্য হয়েছে। এ কাজ গণঅভ্যুত্থানের কমিটমেন্টের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল!’ একইসঙ্গে বিদ্যমান এই আইন বাতিল করে দ্রুত নতুন আইন করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিনসহ আরও অনেকে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছি এবং তাদের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বক্তব্যে বলা হয়, ‘আজও ফ্যাসিবাদী সরকারের রাষ্ট্রপতি বহাল আছেন। আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অবৈধ রাষ্ট্রপতির অধীনে ফ্যাসিস্ট আইনি কাঠামোয় গঠিত নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনসহ আইনটি বাতিল করে নতুন আইনের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও অবিতর্কিত নির্বাচন কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

২০২২ সালে তৎকালীন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল উল্লেখ করে নাগরিক কমিটি বলছে, আওয়ামী সরকারের ওই আইন তখন বিএনপিসহ অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিল। নির্বাচন ব্যবস্থা সরকার কমিশনও বর্তমান আইনটি বদলানোর পক্ষে। ইতোমধ্যেই তারা একটি নতুন আইনের খসড়া তৈরি করেছে, যা সরকারের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সার্চ কমিটি গঠন করে ফেলায় এ কাজ আর এগোবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। ইসি গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের আগে সংস্কার কমিশনের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। তবে সার্চ কমিটি গঠিত হয়ে যাওয়ার পর এই দফায় কমিশন গঠনের জন্য নিয়োগের আইনটির সংস্কার অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। সার্চ কমিটি গঠনের আগে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন কী প্রস্তাব পেশ করে, তার জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিল।

তিন মাসের অধিক ক্ষমতায় থেকে এই সরকার ইতোমধ্যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজের ক্ষেত্র ও সীমা অতিক্রম করেছে বলে দাবি করে তারা আরও বলেন, তাছাড়া এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত। কাজেই সরকারকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি ধারণ করতে হবে। ড. ইউনূসকে মনে রাখতে হবে, তিনি ছাত্র-জনতার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। তরুণ শিক্ষার্থী সমাজসহ আপামর জনগণের কাছেই তিনি দায়বদ্ধ।

রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে সংস্কার হবে না, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে শুনতে চান না উল্লেখ করে বক্তব্যে বলা হয়, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কাঠামোর মূলোৎপাটন করতে শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছে। দুই হাজারের বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন, ছয় শতাধিক যোদ্ধা চোখ হারিয়েছেন, হাজারের বেশি যোদ্ধা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে যে সরকারকে বসিয়েছে, সেই সরকার দায়িত্বশীল আচরণ করবে বলেই আমরা আশা করি। জনগণ গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।