ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে গত দুই মাসে দুই শতাধিক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ১ হাজার ১০০-এর বেশি। পরিস্থিতি বলছে, গাজার পর লেবানন শিশুদের জন্য দ্বিতীয় দোজখে পরিণত হচ্ছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে শিশু নিহতের তথ্য জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ এ বিষয়ে জেনেভায় সংবাদ সম্মেলন করে। তাতে ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এন্ডার বলেন, দুই মাসেরও কম সময়ে লেবাননে দুই শতাধিক শিশু নিহত হয়েছে। এখনো সমানতালে হামলা চলছে। এ ব্যাপারে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যারা ব্যবস্থা নিতে সক্ষম তারা মুখ না খোলায় সমালোচনা করেন জেমস।
তিনি আরও বলেন, লেবানন ও গাজার সংঘাতের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিল রয়েছে। সেখানেও ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের যুদ্ধে ৪৩ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যানুযায়ী নিহত শিশুর সংখ্যা ১৬ হাজারেরও বেশি। লেবাননে গাজার মতোই পরিস্থিতি।
এদিকে যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাস্তুচ্যুত লক্ষাধিক শিশুকে ইউনিসেফ সহায়তা করছে বলে জানান জেমস।
সেপ্টেম্বরে লেবাননে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ্ বিরদ্ধে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। কিন্তু অভিযানের নামে তারা বেসামরিক এলাকায় বোমা হামলা চালাচ্ছে। এতে হিজবুল্লাহর চেয়ে সাধারণ নাগরিক হতাহত হচ্ছে বেশি।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৬ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া ১৪ হাজার ৯২৯ জন আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে সেখানে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনিদের দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে হিজবুল্লাহ ও লেবানন সরকার। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও অভিযান থামাবে না তার দেশ। কাগজে কী আছে, তা মেনে চলতে বাধ্য নয় তারা।
সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যা করার পাশাপাশি দক্ষিণ লেবানন দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। মার্কিন প্রস্তাব অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যাবে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। একে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল সংলগ্ন দক্ষিণ লেবানন, বিশেষ করে লিতানি নদীর দক্ষিণে হিজবুল্লাহর কোনো অবস্থান থাকবে না। সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠী বলতে শুধু লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা অবস্থান করতে পারবে।