Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ডুবতে বসেছিল ‘জন উইক’, বিনিয়োগ করে বাঁচান ইভা লঙ্গোরিয়া

 

chardike-ad

সব নায়কই সুপারহিরোর পোশাক পরে হাজির হয় না। কেউ কেউ আসে চেক হাতে নিয়েও। ‘জন উইক’ সিনেমার জন্য এভাবেই নায়ক হয়ে হাজির হয়েছিলেন ইভা লঙ্গোরিয়া। বিষয়টি সম্প্রতি তিনি নিজেই বিজনেস ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেন।

সেই বিনিয়োগ ইভাকে আর্থিক লাভের স্বাদও দিয়েছে। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আজও তিনি ওই বিনিয়োগের লভ্যাংশ পাচ্ছেন।

সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইভা বলেন, তিনি আজও নিয়মিত ছবিটির আয়ের চেক পান।

এর কিছুদিন আগেই জানা যায়, বাজেটে টান পড়ায় ‘জন উইক’-এর কাজ তখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তখনই নীরবে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসেন ইভা। তিনি এগিয়ে না এলে ‘জন উইক’ ফ্র্যাঞ্চাইজের অস্তিত্বই থাকত না আজ।

সেই বিনিয়োগ সম্পর্কে ইভা বিজনেস ইনসাইডারকে বলেন, ‘বিষয়টি সত্যি। তবে তখন আমার একেবারেই শুরু। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অত টাকাও ছিল না। আর বিনিয়োগের অঙ্কটা ছিল বিশাল। ছবি কীভাবে বানানো হয় সে বিষয়েও আমার কোনো ধারণা ছিল না। …বিনিয়োগকারী হিসেবে আমি ছিলাম জিনিয়াস।’

ইভা জানান, একজন এজেন্ট তাকে ফোন করে ‘জন উইক’-এ বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন। পরিচালকদের নিবেদন ও আবেগ দেখে তিনিও নিশ্চিন্ত হয়ে বিনিয়োগ করে ফেলেন।

‘জন উইক’-এর বিনিয়োগ থেকে এখনও টাকা পাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ। তবে কষ্ট লাগে বাকি ছবিগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে না পারায়। …আমার একমাত্র ভুল ছিল বাকি সিনেমাগুলোর সঙ্গে যুক্ত না হওয়া।’

ইভা জানান, যত টাকা (৬ মিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করেছিলেন, তার দ্বিগুণের বেশি ফেরত পেয়েছেন তিনি।

‘জন উইক’-এর ১০ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছবিটির সহ-পরিচালক চ্যাড স্ট্যাহেলস্কি জানান, শুটিং শুরুর আগে তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন।

স্ট্যাহেলস্কি বলেন, ‘শুটিং শুরু হতে তখন এক সপ্তাহও নেই। তখনই প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার বাজেটের টান পড়ে যায়। ছবিটির জন্য আমরা স্বতন্ত্রভাবে অর্থায়ন জোগাড় করছিলাম। কিন্তু একজন বিনিয়োগকারী সময়মতো অর্থ টাকা তুলতে পারলেন না।’

ছবিটির আরেক সহ-পরিচালক ডেভিড লিচ ও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা কিয়ানু রিভসও নিজেদের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। ছবিটির অন্যতম প্রযোজক ব্যাসিল ইওয়ানিক ছবিটির তৈরির জন্য তার তিনটি ক্রেডিট কার্ডের সীমার বাইরে খরচ করে ফেলেন।

স্ট্যাহেলস্কি বলেন, টাকা জোগাড়ের কোনো আশা যখন দেখা যাচ্ছিল না, তখন অর্থায়ন জোগাড়ের দায়িত্বে থাকা ট্যালেন্ট এজেন্সি সিএএ তাদের কয়েকজন ক্লায়েন্টকে ছবিটিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। তখনই এগিয়ে আসেন ইভা লঙ্গোরিয়া।

‘ও আমাদের এই বিপদ থেকে টেনে তুলতে এগিয়ে আসে। যত টাকার ঘাটতি ছিল, তা দেয়। আক্ষরিক অর্থেই অর্থাভাবে অভাবে আমরা যখন ছবির কাজ গুটিয়ে দেব, তার ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে টাকাটা দেয় ও।’

তবে ছবিটি ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়ে বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার আগে ইভার এই বিনিয়োগ সম্পর্কে কাউকে কিছু জানাননি প্রযোজক ইওয়ানিক।

সাফল্য পাওয়ায় ছবিটির তিনটি সিক্যুয়েল নির্মাণ হয়েছে। এ ফ্র্যাঞ্চাইজের চারটি ছবি এ পর্যন্ত ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলারের বেশি আয় করেছে।

টিভি সিরিজ ‘ডেসপারেট হাউসওয়াইভজ’-এ অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পাওয়া ইভা লঙ্গোরিয়া পরবর্তীতে প্রযোজক হিসেবেও সফল হন। তার প্রযোজিত উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে লাইফফটাইমের সিরিজ ‘ডিভিয়াস মেইডস’ ও ডেটিং রিয়েলিটি শো ‘রেডি ফর লাভ’।

এছাড়া দুটি ফুটবল ক্লাব, একটি টেকিলা ব্র্যান্ড ও একটি খাবারের ব্র্যান্ডেও বিনিয়োগ আছে তার।

নিজের বিনিয়োগ কৌশল সম্পর্কে ইভা বলেন, ‘আমি সবসময় নিজেকে প্রশ্ন করি, “আমার টাকা থেকে কীভাবে আরও টাকা উপার্জন করা যায়?” বিষয়টা নিয়ে আমি রীতিমতো আসক্ত। ঘুমানোর সময়ও আমি চাই টাকা কামাতে চাই। তাই নিজের চারপাশে এমন মানুষদের সঙ্গে নিজেকে ঘিরে রাখি যারা আমাকে বলতে পারবে কোনটা ঝুঁকিপূর্ণ আর কোনটা নয়।’