জনপ্রিয় কে-ড্রামা ‘দ্য মুন এমব্রেসিং দ্য সান’-এ অভিনয় করে পরিচিতি পাওয়া দক্ষিণ কোরীয় অভিনেতা সং জে লিমকে মঙ্গলবার সিউলে নিজ বাসভবনে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
৩৯ বছর বয়সি এই অভিনেতা ক্যারিয়ার শুরু করেন মডেল হিসেবে। ২০১২ সালে এই পিরিয়ড ড্রামায় অভিনয় করে তিনি খ্যাতি পান। এরপর তিনি আরও কয়েকটি ভ্যারাইটি শো ও টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় করেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লিমের অ্যাপার্টমেন্টে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তার মৃত্যুতে কারও হাত থাকার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
সং জে লিমের মৃত্যু দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন জগতে যে ভয়াবহ চাপ নিয়ে কাজ করতে হয়, তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। লিমের মৃত্যুর খবরে দক্ষিণ কোরিয়ার অন্য তারকারা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
২০১৬ সালে ‘আওয়ার গ্যাপ সুন’ সিরিজে লিমের সঙ্গে কাজ করা সহঅভিনেত্রী ইউ সান ইনস্টাগ্রামে তাদের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক, খুব কষ্ট হচ্ছে…শান্তিতে বিশ্রাম নাও।’
আরেক অভিনেতা পার্ক হো সান ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘তুমি সবসময় এতটাই হাসিখুশি ছিলে যে এ খবর বিশ্বাস করা কঠিন।’
সংবাদমাধ্যম ইয়নহাপ জানিয়েছে, অভিনেতার পরিবার ছোট পরিসরে পারিবারিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজন করতে চায়।তারকাদের চেহারা ও আচরণের ক্ষেত্রে কঠোর মানদণ্ডে বেঁধে দেয়ার জন্য পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন জগৎ। এই মানদণ্ড অনেকসময়ই মাত্রাতিরিক্ত চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি ‘প্যারাসাইট’-এর অভিনেতা লি সান-কিউন এবং কে-পপ তারকা মুনবিন, গু হারা ও সুলির মতো বেশ কয়েকজন হাইপ্রোফাইল তারকার মৃত্যুতে দেশটির বিনোদন শিল্পে এই চাপের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।
কে-পপ আইডল এবং কে-ড্রামা তারকাদের সাম্প্রতিক মৃত্যুর ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন শিল্পে মানসিক স্বাস্থ্য ও চাপের বিষয়ে চলমান উদ্বেগকে আরও তীব্র করেছে।
ছেলেদের ব্যান্ড অ্যাস্ট্রো-র সদস্য মুনবিন গত বছর মাত্র ২৫ বছর বয়সে মারা যান। কে-পপ গায়ক ও অভিনেত্রী সুলি ২০১৯ সালে ২৫ বছর বয়সে মারা যান। এর দুই বছর আগে ছেলেদের ব্যান্ড শিনি-র ২৭ বছর বয়সি সদস্য কিম জং-হিউনকে নিজ বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
দেশটির বিনোদন এজেন্সিগুলো কাউন্সেলিং সেবা ও তুলনামূলক কম চাপের শিডিউলসহ বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা ব্যবস্থা চালু করেছে। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কোরীয় বিনোদন জগতের তীব্র প্রতিযোগিতা, জনসাধারণের কড়া নজরদারি এবং চেহারা ও আচরণ নিখুঁত হওয়ার প্রত্যাশা তারকাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।