আগামী ৫ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির তিনটি টাইম জোনের মধ্যে পূর্ব উপলকূলবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা সবার আগে ভোট দেওয়া শুরু করবেন। এখন প্রশ্ন হলো, এই ভোটের ফল জানা যাবে কবে?
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের ফল কখন জানা যাবে, তা নির্ভর করছে অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেমন তীব্র হবে তার ওপর। কিছু রাজ্যে যদি ভোটের ব্যবধান কয়েক হাজারে নেমে আসে তাহলে হয়তো ২০২০ সালের মতোই পরিস্থিতি তৈরি হবে। কিন্তু একজন প্রার্থী যদি নির্বাচনে ব্যাপক ব্যবধানে এগিয়ে থাকেন, তাহলে ফলাফল আরও আগে পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে। তবে এ বছরের নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমালা হ্যারিসের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন অর্থাৎ ৯ নভেম্বর সুইং স্টেট উইসকনসিনে জয় পান ট্রাম্প। এরমধ্য দিয়ে তিনি ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ম্যাজিক নম্বর অতিক্রম করেন। এর পাঁচ মিনিট পরই তাঁকে শুভেচ্ছা জানান সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
তবে ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতে আরও সময় লাগে। ওই বছর ৩ নভেম্বর ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চূড়ান্ত ফল জানতে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। সেদিন পেনসিলভানিয়ায় ২০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাওয়ার পর তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেন।
সবচেয়ে বিলম্বিত ফলাফলের রেকর্ডটি আমেরিকার ২০০০ সালের মার্কিন নির্বাচনে। ওই বছর নির্বাচনের ফল পেতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে প্রায় এক মাস অপেক্ষা করতে হয়। ওই বছর ভোট হয় ৭ নভেম্বর এবং ফলাফল জানা যায় ১ ডিসেম্বর।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল অন্যান্য দেশের মতো ভোট সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয়। এটি নির্ধারিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ওপর। প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে কমপক্ষে ২৭০টিতে জিততে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ‘ইলেকটোরাল ভোট’। মূলত প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা নির্ভর করে এই ইলেকটোরাল ভোটের ওপর।
ইলেকটোরাল ভোট পদ্ধতিটি ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ নামে পরিচত। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে ‘ইলেকটর’ বা নির্বাচকদের মনোনয়ন দেওয়া হয়। এই নির্বাচকেরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এই পুরো পদ্ধতিটি নিয়ন্ত্রণ করে মার্কিন আইন পরিষদ–কংগ্রেস। কোন রাজ্যে কত ইলেকটোরাল ভোট থাকবে, সেটি নির্ধারিত হয় ওই রাজ্যে কতটি কংগ্রেশনাল ডিসট্রিক্ট রয়েছে, তার ওপর। প্রতিটি কংগ্রেশনাল ডিসট্রিক্টের জন্য একটি করে ভোট এবং দুজন সিনেটরের জন্য দুটি ভোট বরাদ্দ থাকে।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হওয়ার সময়ও বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভিন্নতা দেখা যায়। এমনকি একই অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরেও এ নিয়ে ভিন্নতা দেখা যায়। কারণ আমেরিকার নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, ভোটের জন্য লাইনে দাঁড়ান সবাই ভোট দিতে পারবেন। কত সময় লাগছে এটি এখানে দেখা হয় না।