২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের সর্বশেষ পরিমার্জন হয় ২০২২ সালে। নতুন বছরের শিক্ষাক্রমে সেটিরই পরিমার্জন করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেবে সরকার। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সূত্র অনুযায়ী ২০২১ এর শিক্ষাক্রম ত্রুটিপূর্ণ বিধায় ফেরা হচ্ছে পুরোনো শিক্ষাক্রমে। তবে পাঠ্যবই থেকে বিতর্কিত বিষয়গুলো সরিয়েই পুরোনো শিক্ষাক্রমের ২৩টি (সব কটি সবার জন্য নয়) বই তুলে দেয়া হবে শিক্ষার্থীদের হাতে।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, নতুন পাঠ্যপুস্তকে রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা থেকে আগের বিতর্কিত ব্যক্তিদের নাম এবং গল্পও বাদ দেয়া হচ্ছে। রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে বই ছাপা হবে। বিশেষ করে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে শিশুসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের গল্প-প্রবন্ধ বাদ দিয়ে রচনা ও সম্পাদনায়ও আসছে পরিবর্তন।
তবে চতুর্থ শ্রেণি থেকে উপরের দিকের বইয়ে পরিবর্তন হলেও প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তেমন কোন পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। এনসিটিবির একটি সূত্র জানায়, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কার্যক্রমভিত্তিক শিখন শেখানো (অ্যাকটিভিটি বেজড টিচিং লার্নিং) পদ্ধতি অনুযায়ী পাঠ্যবই প্রণয়ন হয়েছে। ফলে এসব পাঠ্যবই ছাপার বিষয়ে ইতিমধ্যে যে দরপত্র দেওয়া হয়েছে, তার আলোকেই হবে। এসব বইয়ে প্রচ্ছদ বা ভেতরের লেখায় বড় কোন পরিবর্তন আনা হবে না।
বিভিন্ন বইয়ের রচনা ও সম্পাদনা থেকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেয়া হবে। এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, সম্পাদনা থেকে সবাইকে বাদ দেয়া হবে না। বরং যাদের বিষয়ে আপত্তি আছে তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের রাখা হতে পারে। বিশেষ করে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ. কে. এম রিয়াজুল হাসান জানান, ২০১২ সালে শিক্ষাক্রম হয়েছে তবে সেটার সর্বশেষ পরিমার্জন হয়েছে ২০২২ সালে। এবার ২০২২ সালের সংস্করণের বই পরিমার্জন করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সম্পাদনা থেকে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের নাম এবং তার রচনা বাদ দেয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে নতুন পরিমার্জিত বইয়ে যেসব ব্যক্তিদের লেখার বিভিন্ন অংশে পরিবর্তন পরিমার্জন আনা হয়েছে তাদের অনুমতি নেয়ার প্রসঙ্গে। এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, এসব ক্ষেত্রে বিতর্কিত লেখকদের গল্প বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া যাদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আছে তাদের গল্পই নতুন বইয়ে যাবে। তবে যেসব লেখকদের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে তাদের লেখা নতুন বইয়ে ছাপানো হবে না।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ. কে. এম রিয়াজুল হাসান এ প্রসঙ্গে বলেন, লেখকদের সাথে চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী লেখা ছাপানো হবে। যাদের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ তাদের লেখা এই শিক্ষাক্রমে যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ এই মুহূর্তে কপিরাইট ইস্যু আছে এমন গল্পগুলোর চুক্তি নবায়ন করে সেটা ছাপানোর মত সময় ছিল না। তবে বিশেষ কোন প্রসঙ্গ থাকলে যেমন উচ্চমাধ্যমিকে হুমায়ূন আহমেদের একটি গল্পের ক্ষেত্রে অনুমতির প্রয়োজন ছিল, সেটা আমরা নিয়েছি।