তিন সপ্তাহের বিধিনিষেধ কাটিয়ে পুরনো রূপে ফিরেছে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো। বিধি নিষেধ তুলে নেয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, সুবলং ঝরনাসহ সব স্পটেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। অনেকেই দল বেধে হ্রদের নীল জলে করছেন নৌভ্রমণ। উপভোগ করছে হ্রদ, পাহাড় আর মেঘের মিতালী।
পাহাড়ে সহিংসতার জেরে সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ সাজেক ও পরে ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তিন জেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। বিধিনিষেধের ফলে তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতির স্বাভাবিক হওয়ায় ৩০ অক্টোবর রাঙামাটির জেলা প্রশাসন থেকে রাঙামাটির পর্যটন খাতে বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়। তবে সাজেক ভ্রমণের জন্য ৫ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পর্যটকদের।
শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে রাঙামাটিতে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। দলে দলে ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে তাদের। সেতুর পাটাতনে হাঁটা-চলার পাশাপাশি অনেকেই কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার করছেন।
দীর্ঘ ২৪ দিন পর পাহাড়ে ভ্রমণ করছেন পর্যটকরা। শহরের হোটেল মোটেলগুলো হয়েছে বুকিং। এতে আর্থিক লোকসান কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন ব্যবসায়ীরা। রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে মুগ্ধতার কথা জানালেন পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক সৌমেন নন্দী বলেন, বিধি নিষেধ উঠে গেছে এমন সংবাদ দেখার পরের দিনই বন্ধুরা মিলে রাঙামাটির প্রকৃতি দেখতে চলে এসেছি। আমরা ২০ জনের একটি গ্রুপ এসেছি। রাঙামাটির রূপ সব সময় মুগ্ধ করে।
পর্যটন নৌযান ঘাটের ম্যানেজার মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, মাসখানেক পর্যটক আগমন বন্ধ থাকায় আমরা আর্থিক লোকসানে পড়েছি। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়াতে ট্যুরিস্ট বোট মালিক-শ্রমিকরা সবাই খুশি। আশা করছি এই মৌসুমে একটা ভালো ব্যবসা হবে এবং আমরা আমাদের লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবো।
হোটেল স্কোয়ার পার্কের ব্যবস্থাপক আবুল হাসান রায়হান বলেন, বিধিনিষেধের কারণে ইমেজ সংকটে পড়েছে রাঙামাটির পর্যটক খাত। বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় স্বস্তি সবার। তবে শুক্র ও শনিবার যেভাবে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। তাতে আশা করছি পুরো শীত মৌসুম ভালো সময় যাবে।
পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রথম দিন হিসেবে বেশ ভালোই পর্যটক সমাগম হয়েছে। সবাই ঝুলন্ত ব্রিজে যাচ্ছে, বোট নিয়েও পর্যটকরা কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে যাচ্ছেন। পর্যটক আগমনের হারটা সময়ের সঙ্গে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।