Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভারতের আলাদা দুটি রাজ্যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।

Fire Incident
গুজরাটে ধ্বসে পড়া গেমিং জোনে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে দেশটির দমকল কর্মীরা।

প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির গুজরাট রাজ্যে। প্রদেশটির রাজকোট শহরে টিআরপি গেমিং জোনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ শিশু সহ ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত শিশুদের বেশিরভাগেরই বয়স ৯ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। এখনো সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছে। অগ্নিকাণ্ডের পর সেই গেমিং জোন থেকে ১৫-২০ জন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। খবর: টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভি।

chardike-ad

রাজকোট শহরের সহকারী পুলিশ কমিশনার বিনায়ক প্যাটেল জানিয়েছেন, “মৃতদেহগুলো সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে। তাই সেগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় গেমিং জোনটির মালিককে আটক করেছে পুলিশ।”

এ বিষয়ে শহরের পুলিশ কমিশনার রাজু ভার্গাভ জানিয়েছেন, “আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে যত দ্রুত সম্ভব মৃতদেহগুলো বের করে আনার চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলো হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে। তদন্ত চলছে। যুবরাজ সিং সোলাঙ্কি নামে এক ব্যক্তি ওই গেমিং জোনের মালিক। আমরা অবহেলার দায়ে মৃত্যুর অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছি।

কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা আমি এখনই বলতে পারছি না। তদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। বেশ কয়েকটি ফায়ার ইঞ্জিন সেখানে কাজ করছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর তল্লাশি অভিযান শেষে সেখানে ঠিক কতজন হতাহত হয়েছেন সেটা আমরা বুঝতে পারবো। আগুনের এই ঘটনার পর নগরীর সব গেমিং জোন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল জানিয়েছেন, আগুন লাগার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে ‘বিশেষ তদন্ত দল’ গঠন করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গেমিং জোনটির এ ধরনের কার্যক্রম চালানোর জন্য পরিকাঠামোগত যে অনুমতি প্রয়োজন, তা ছিল না বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ঢোকার ও বের হওয়ার জন্য একটিমাত্র পথ ছিল ওই গেমিং জোনে। পথটি সরু হওয়ায় এবং তার ওপর জ্বলন্ত কাঠ ও লোহার পাইপ পড়ে যাওয়ার কারণে অনেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।

এরইমধ্যে টিআরপি গেমিং জোনের মালিক ও ম্যানেজারকে আটক করেছে পুলিশ। রাজ্যের সব গেমিং জোন পরিদর্শন ও অগ্নিনিরাপত্তার অনুমতি ছাড়াই যেগুলো চলছে তা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। ঘটনা তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দলকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

রাজ্য সরকার থেকে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য চার লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে সাহায্য প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লির একটি শিশু হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৭ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে খবরটি নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা এনডিটিভি।

Hospital Fire
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে দিল্লি ফায়ার সার্ভিস।

দিল্লি ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শনিবার রাত ১১টা ৩২ মিনিটে তাঁরা পূর্ব দিল্লির বিবেক বিহার এলাকায় একটি বেবি কেয়ার সেন্টারে আগুন লাগার খবর পায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে ১৬টির মতো ফায়ার টেন্ডার ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

আগুন লাগার ঘটনায় ১২ জন নবজাতককে উদ্ধার করা হলেও ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় ৭ জনের। বাকি ৫ শিশুকে রাজধানীর অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে বিবেক বিহার থানার পুলিশ। তবে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন হাসপাতালটির কর্মকর্তারা।

এদিকে পৃথক ঘটনায় শনিবার রাতে দিল্লির শাহদারা এলাকার পশ্চিম আজাদ নগরের একটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং ১৩ জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়।

দুই ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু , উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।