দেশজুড়ে চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। যার ফলে রীতিমতো অতিষ্ঠ উঠেছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। গ্রীষ্মকাল এলেই যে রোগটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সেটি হচ্ছে হিটস্ট্রোক। হিটস্ট্রোকে বা সান স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা গরম এলেই যেন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এমনকি আপনি নিজেও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কি, অবাক হচ্ছেন?
চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি লক্ষণ দেখা দিলে আপনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। যে লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও সচেতন হতে পারবেন। আর নিচের লক্ষণগুলোর যেকোনো এক বা একাধিক দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
প্রচণ্ড মাথাব্যথা : হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। এ ছাড়া গরমে মানুষের মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। এটি হিটস্ট্রোকের অন্যতম একটি লক্ষণ হতে পারে।
বেশি তৃষ্ণা অনুভব ও অতিরিক্ত ঘামানো : হিটস্ট্রোকের আগে অনেক বেশি তৃষ্ণা অনুভব হবে, সেইসঙ্গে ডিহাইড্রেটেড এবং আড়ষ্টতা অনুভব হতে পারে। শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে।
হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পাওয়া : হিটস্ট্রোকের আগে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে।
শ্বাসকষ্ট : হিটস্ট্রোকের অন্যতম লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট এবং দ্রুত ও ভারী শ্বাস-প্রশ্বাস।
দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া : তীব্র গরমের কারণে শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে। এতে শরীরে ক্লান্তি ও দুর্বলতা তৈরি হয়। ব্যক্তি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। এগুলো হিটস্ট্রোকের লক্ষণ।
পেশিতে ব্যথা : হিট স্ট্রোকের আগ মুহূর্তে পেশিতে ব্যথা অনুভব হতে পারে। যদিও সাধারণ ব্যথা ভেবে অনেকে এটাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না।
বমি বমি ভাব : মাথাব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন ও হাইপারভেন্টিলেশন থেকে অক্সিজেনের অভাব ইত্যাদির কারণে হিট স্ট্রোকের আগে বমি বমি ভাব হতে পারে।
কথা জড়িয়ে যাওয়া : হিটস্ট্রোকের আগে যেসব লক্ষণ দেখা যায়, তারমধ্যে একটি হলো কথা জড়িয়ে যাওয়া। ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করতে পারে।
বিরক্তি-বিভ্রান্তি : মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে হিটস্ট্রোকের আগে মানুষ বিরক্ত বোধ করতে পারে, রাগান্বিত হতে পারে, অযৌক্তিক কথা বলতে পারে এবং এমনকি প্রলাপ বকতে করতে পারে।
ঘাম না হওয়া : হিটস্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ হলো প্রচণ্ড গরমেও ঘাম না হওয়া। সাধারণত এর মানে হচ্ছে, শরীরে ঘাম হওয়ার মতো পানি আর নেই বা শরীরের প্রাকৃতিক শীতল প্রক্রিয়াটি কাজ করছে না।
চিকিৎসকদের মতে, হিটস্ট্রোক এড়াতে শরীর হাইড্রেট রাখার কোনো বিকল্প নেই। তাপমাত্রা বেশি হলে ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের পোশাক পরে ঘরের বাইরে যেতে হবে। সূর্যের আলো থেকে চোখকে রক্ষা করতে সানগ্লাস ব্যবহার করা। প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। তবে কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে।