ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ ভোটারকে ভয় দেখানো এবং বাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
একই জেলার মাথাভাঙায় এক সিআরপিএফ জাওয়ানের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃত জাওয়ানের নাম নীলেশ কুমার নীলু। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ নীলেশ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, মাথাভাঙার বাইশগুড়ি হাইস্কুলে কর্তব্যরত ছিলেন মৃত জাওয়ান। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের কুইক রেসপন্স টিমের (কিউআরটি) সদস্য ছিলেন তিনি। হঠাৎ করেই রাতের বেলায় তাঁর নাক, মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নীলেশের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নীলেশের বাড়ি বিহারের নাওয়াদা জেলায় বলে জানা গেছে।
এদিকে জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের সিপাইপাড়া এলাকায় বিজেপির একটি বুথ কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে কে বা কারা রাতে বিজেপির বুথ কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
আগুনের ঘটনায় দলীয় পতাকা থেকে ব্যানার সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এলাকার বুথ সভাপতি তথা বিজেপি কর্মী গৌতম রায় বলেন, রাত ৯টার পর এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা রাত পর্যন্ত সব কাজকর্ম শেষ করে বাড়ি ফিরি। তারপরই এই খবর পাই। ভোরবেলা এসে দেখি এই অবস্থা। কিন্তু আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। কাউকে দেখিনি। তাই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারছি না। পুরো ঘটনা প্রশাসনসহ এলাকার বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে।
প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৭ টায়, শেষ হবে সন্ধ্যা ৬ টায়। এই দফায় পুরো দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৬ কোটি ৬৩ লাখ। মোট ১ লাখ ৮৭ হাজার ভোট গ্রহণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ভোট নেওয়া হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ভোটারদের সুষ্ঠুভাবে ভোটদানের জন্য প্রায় ১৮ লাখ ভোট কর্মী মোতায়েন রয়েছেন।
প্রথম দফায় দেশজুড়ে ১৬২৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ভোটযুদ্ধ হবে। এর মধ্যে ১৪৯১ জন পুরুষ প্রার্থী, এবং ১৩৪ জন নারী প্রার্থী। হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ৮ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, ২ জন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং একজন সাবেক রাজ্যপাল।
এদের মধ্যে অন্যতম কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি (নাগপুর, মহারাষ্ট্র), কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী কিরেন রিজিজু (অরুণাচল পশ্চিম), কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল (দিব্রুগড়, আসাম) এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (কোচবিহার) অন্যতম।
অন্যদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের পুত্র কংগ্রেস নেতা কার্তি চিদাম্বরম (শিবগঙ্গা, তামিলনাড়ু), কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ (জোরহাট, আসাম), বিহারের লোক জনশক্তি পার্টির(এলজেপি) প্রধান চিরাগ পাসওয়ান (জামুই, বিহার), ডিএমকে প্রার্থী কানিমোঝি করুণানিধি (থুট্টুকুড়ি, তামিলনাডু) এবং দয়ানিধি মারাণ (চেন্নাই সেন্ট্রাল, তামিলনাডু)।