বিশ্বজুড়ে প্রতিবছরই বাড়ছে অস্ত্র আমদানি-রপ্তানি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিভিন্ন সময়ে নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের সুযোগে এই আমদানি-রপ্তানি যেন রমরমা রূপ ধারণ করে।
অস্ত্র বাণিজ্যের এই বিষয়টি গত চার বছরে বেড়েছে অনেক গুণ। সুইডেনের স্টকহোম পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট(সিপ্রি) এর এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, ২০১৯-২৩ এই চার বছরে অস্ত্রের আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে বহুগুণ। আর এই অস্ত্রের বেশিরভাগ ক্রেতা হচ্ছে এশিয়া(মধ্যপ্রাচ্য সহ) এবং ওশেনিয়া অঞ্চল। ওশেনিয়াকে এই পরিসংখ্যানের বাইরে রাখলে দেখা যাবে, বৈশ্বিক অস্ত্রের আমদানিকারক হিসেবে এশিয়া বরাবরই এগিয়ে আছে।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান অস্ত্র আমদানির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। চীন ও উত্তর কোরিয়ার আসন্ন হুমকির কথা চিন্তা করে প্রতিবেশী এই দুই দেশ অস্ত্র আমদানি বাড়িয়েছে অনেক। ২০১৪-১৮ সালের তুলনায় ২০১৯-২৩, গত চার বছরে দক্ষিণ কোরিয়া ৬.৫ শতাংশের মতো এবং জাপান প্রায় ১৫৫ শতাংশ অস্ত্র আমদানি বাড়িয়েছে।
এই দুই দেশে মূলত অস্ত্র রপ্তানি করে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বলতে গেলে এই দুই দেশে অস্ত্রের সরবরাহকারী মূলত যুক্তরাষ্ট্রই। দক্ষিণ কোরিয়া তার আমদানিকৃত অস্ত্রের ৭২ শতাংশ আনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অন্যদিকে জাপান তার অস্ত্র আমদানির প্রায় ৯৭ শতাংশই আনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলগুলোতেও অস্ত্র আমদানি বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশেষ করে তাইওয়ান অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। চীনের সঙ্গে সংঘাতের পর থেকেই অস্ত্র আমদানির মাত্রা বাড়িয়েছে তাইওয়ান। তাইওয়ানের অস্ত্র ক্রয়াদেশের চিত্র সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগামী পাঁচ বছর লাগাতার অস্ত্র আসবে যার মধ্যে রয়েছে ৬৬টি কমব্যাট এয়ারক্রাফট, ১০৮টি ট্যাংক এবং ৪৬০টির মতো জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। ২০১৯-২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯৯ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করতো এশিয়ার এই অঞ্চলটি।
অন্যদিকে এশিয়া-আফ্রিকা জুড়ে বিস্তৃত মধ্যপ্রাচ্যে সর্ববৃহৎ অস্ত্র আমদানিকারক হচ্ছে সৌদি আরব, কাতার ও মিশর। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জায়গায় আমদানিকৃত অস্ত্রের ৫২ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এর বাইরে অন্যান্য পশ্চিমা দেশও এতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত ছাড়াও ইরান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ অস্ত্র আমদানি-রপ্তানির এই ধারাকে আরো প্রসারিত করবে বলেই মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।