২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে হঠাতই মুহুর্মুহু গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে তদানীন্তন বিডিআর সদর দফতর পিলখানার এলাকা। বিডিআরদের বিদ্রোহে সেদিন লেখা হয়েছিল বাংলাদেশের পটে এক ন্যাক্কারজনক ইতিহাস। দুদিন ব্যাপী এ বিদ্রোহে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর শাকিল, তার স্ত্রী, ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। চার বছর পর ২০১৩ সালে বিচারের রায় হয়, ২০১৭ সালে হাইকোর্টে অনুমোদন হয় সাজা।
বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত খালাস পেয়েছেন এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষ হয়েছে, এ মামলায় এমন আসামি অন্তত ৫০০ জন। এদের বিরুদ্ধে এখন বিস্ফোরক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। তবে বারবার জামিন চেয়ে আবেদন করলেও মিলছে না মুক্তি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে কেবল মাত্র এই মামলাতেই সর্বোচ্চ সংখ্যক সাড়ে ৮শ আসামি রয়েছে। এ মামলায় শুধু মৃত্যুদন্ডই পেয়েছে ১৫২জন আসামি। হাইকোর্টে রিভিউতে শেষ পর্যন্ত ১৩৯ জনের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা হয়েছেয়, যাবজ্জীবনে আছেন ১৮৫ জন, বিভিন্ন মেয়েদে সাজা ২২৮ জন, খালাস পেয়েছেন ২৮৩ জন।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার মাত্র ৪০ দিনের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে। তাদের মতে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র থেকেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল সেনাবাহিনীর বিপথগামীরা। অন্যদিকে বিদ্রোহ দমনে সরাসরি সামরিক শক্তি প্রয়োগ না করায় বিরোধী দল বিএনপি শুরুতেই প্রশ্ন তুলেছিল ক্ষমতাসীনের দিকে। তাদের অনেকে সে সময় এই ঘটনার জন্য প্রতিবেশী ভারতের দিকেও আঙ্গুল তুলেছিলেন। ‘অপারেশন ডালভাত’ এর নামে টাকা লুটপাটের বিতর্কও ছিল সবার মুখে মুখে। এতবড় ঘটনা ঘটে গেলেও তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদের কোনো সাক্ষ্য নেয়া হয় নি। সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও। এতসব যদি, কিন্ত, কেনো প্রশ্নের মাঝেই পেরিয়ে গেলো ১৫টি বছর। অনেকেরই সাজা শেষ হয়েছে কিন্ত মেলেনি মু্ক্তি, বিচারিক কার্য সম্পন্ন হওয়ার আশায় এখনো বুক বেঁধে অপেক্ষা করছেন সাজাপ্রাপ্ত আসামির স্বজনেরা।