Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মোশতাক-তিশা নয়, প্রকাশনীর ঘাড়ে দোষ দিলেন মহাপরিচালক

আমার মায়ের মুখের ভাষা, আমার প্রানের বাংলা ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল ওরা, বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করেছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। সেই থেকে অদ্যাবধি চলছে বাংলাকে আরও সমৃদ্ধশীল করার প্রচেষ্টা। তাইতো ভাষার মাসের বইমেলা যেন বাঙালির প্রাণের স্পন্দন। পাঠক, লেখক, দর্শনার্থীর সমাগমে সারাদিন মুখরিত থাকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন এবং সোহরাওয়ার্দীর প্রান্তর। এ বইমেলাও কিন্ত বিতর্কের উর্ধ্বে নয়। আছে সমালোচনা, আছে নানা অভিযোগ। আমরা আপনাদেরই করা এক ঝাঁক প্রশ্ন নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলাম বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নুরুল হুদার সাথে। জানতে চেয়েছি মোশতাক-তিশা যুগলের বই ভবিষ্যতে বইমেলায় ঠাঁই পাবে কিনা, কথা বলেছি আপনাদের চাহিদাকে সামনে রেখে, আপনাদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে।

প্রশ্ন: করোনাকালের মধ্যে সীমিত পরিসরে হলেও আমরা বইমেলা আয়োজন করতে পেরেছিলাম, সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছি ২০২২ এবং ২০২৩ সালেও। এবারের বইমেলা নিয়ে কি আমরা করোনার ধাক্কায় গরবের মেলা, বইমেলার যে ক্ষতি, তা কি পুষিয়ে উঠতে পেরেছি।

chardike-ad

উত্তর: এটি বলা কঠিন। কারণ কোনো ঘাটতিই শতভাগ পূরণ করা যায় না। কিন্ত যতদূর সম্ভব আমরা চেষ্টা করেছি, এবং বাংলা একাডেমি বইমেলা সার্থক সফল করতে সার্বিক চেষ্টা বরবারের মতোই অব্যাহত রেখেছে।

প্রশ্ন: মাসব্যাপী বইমেলার অর্ধেক শেষ। এ পর্যায়ে এসে আপনার পর্যালোচনা কি বলছে, এবারের বইমেলা কি অন্যান্যবারের তুলনায় কিছু বেশি সফলতা বয়ে আনতে পেরেছে কিনা।

উত্তর: আমি বলব এবারের বইমেলায় কিছুটা ত্রুটি থাকা সত্তেও ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রচুর অংশগ্রহণ দেখতে পাচ্ছি, মেট্রোরেলের সুবাদে বইমেলার চিত্রই বদলে গেছে।

প্রশ্ন: তবে মেট্রোরেলকে বইমেলার জন্য আশীর্বাদস্বরুপ বলা যেতেই পারে। তবে কি মেট্রোরেলই এবারের বইমেলা সফল হওয়ার নিয়ামক।

উত্তর: না, মেট্রোরেল একটি প্রধান কারণ এবারের বইমেলা সফল হওয়ার পেছনে। তবে আমরা অন্যান্য বারের থেকে এবারে অনেক সুবিধাও রেখেছি। যার কারণে জনসমাগমের ঢল নেমেছে, বিকিকিনিও বেড়েছে। মানছি কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। তবে তা কাটিয়ে সুন্দর এক বইমেলা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেকগুলো কারণে যা যা করা দরকার সব করতে পারেনি। গতবার কিন্তু বইমেলা এরিয়ায় কোনো মোবাইল বাথরুম ছিল না, এবারে শুরু থেকেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতার দিকেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রশ্ন: একটা বিষয় আপনার মাঝে লক্ষ্য করলাম, আপনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতিসত্তার কবি, আপনার তত্ত্বাবধানে চলছে বইমেলা। সেই আপনি মিডিয়ার সামনে অকপটে স্বীকার করছেন বইমেলা আয়োজনে নিজের সীমাবদ্ধতা, ভুল ত্রুটির কথা। আপনি চাইলে এড়িয়ে যেতে পারতেন। এই যে নিজের ভুলগুলো স্বীকার করে নেওয়ার সরলতাটা কি বর্তমান কবি, লেখকদের মাঝে আপনি দেখতে পান।

উত্তর: এটি তো প্রবাদবাক্যেই আছে, মানুষমাত্রই ভুল। গেলবারের চেয়ে একটু ভালোমানের আয়োজন করতে গেলে কিছু ভুলত্রুটির ছাপ থাকবেই। ত্রুটি থাকবেই। ত্রুটি না থাকলে তো মানুষ শিখতে পারবে না। আগের চেয়ে ভালো করতে চাইলেই, ভুল ত্রুটি হয়চ শিখা হয়। আমি মনে করি প্রতিটা লেখকেরই এ ব্যাপারে একই পন্থা অবলম্বন করা উচিত। এখন তারা করছে কিনা তা পুরোপুরি তাদের ব্যাপার।

প্রশ্ন: বইমেলার ১৬তম দিবসে রেকর্ডসংখ্যক ২৯৮টি বই প্রকাশিত হয়। তবে অভিযোগ শুনছি বইয়ের মান নাকি উল্টোপথে হাঁটছে। এখানে দায় কার।

উত্তর: হ্যা, বইয়ের মান সংরক্ষিত হচ্ছে না। লেখক তো লিখবেই। প্রকাশ করে প্রকাশক। তারা যদি যাচাই বাছাই করে বই আনত, তাহলে এতগুলো বই প্রকাশ হওয়ার কথা নয়। পান্ডুলিপি দেখে বই প্রকাশের নিয়মে আসতে পারেনি আমাদের প্রকাশকেরা।

প্রশ্ন: তাহলে আমাদের সমস্যাটা প্রকাশনী নিয়ে। সেক্ষেত্রে মোশতাক তিশার প্রসঙ্গ যদি টানি তবে কি একই উত্তর।

উত্তর: একই। লেখকের লেখা পেয়ে প্রকাশকের দেখতে হবে এটা ছাপানোর মতো কিনা। যখন তারা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ব্যবসা করার জন্য বই আনে তখন লেখক প্রকাশক উভয়ই মেধাসত্ত্বের আইন লঙ্ঘন করে।

প্রশ্ন: ভবিষ্যতে বইমেলায় খন্দকার মোশতাক-তিশার লেখা বইয়ের মতো আরও বই প্রকাশ করা ঠেকাতে কি পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলা একাডেমি।

উত্তর: প্রথমত, এবারই প্রকাশকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার তোরজোর চলছে। এবং ভবিষ্যতের জন্য এ নিয়ে কার করা হচ্ছে।

প্রশ্ন: সর্বশেষ, তরুণ পাঠকদের উদ্দেশ্য আপনার কিছু উপদেশ।

উত্তর: বই পড়তে হবে। বই পড়ার বিকল্প নেই। তাট চেয়েও বড় কথা, বিচার বিবেচনা করে বই পড়তে হবে।