বিশেষ ফ্লাইটে ২৪৮ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। কোরিয়ার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) মাধ্যমে এখন পর্যন্ত এক দিনে সবচেয়ে বেশি কর্মী কোরিয়ায় যাওয়ার সর্বোচ্চ সংখ্যা এটা।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জিন এয়ারের বিশেষ ফ্লাইটটি ২৪৮ বাংলাদেশি কর্মী নিয়ে কোরিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়।
চলতি বছরের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪ হাজার ৯৪১ জন কর্মী পাঠিয়ে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)। দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ইপিএসের আওতায় নির্ধারিত ১৬টি দেশ থেকে কোরীয় ভাষা দক্ষতা ও স্কিল টেস্টের মাধ্যমে অদক্ষ কর্মীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে থাকে।
কোভিড অতিমারির কারণে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১৬টি দেশ থেকে ইপিএস কর্মীদের কোরিয়ায় গমন বন্ধ ছিল। বাংলাদেশে কোভিড পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতির কারণে নির্ধারিত কোভিড বিধি অনুসরণ করে ২০২১ সালের ৯ ও ২২ ডিসেম্বর ১১১ জন কর্মী চার্টার্ড ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া শুরু করেন।
বোয়েসেল জানায়, ২০২২ সালের প্রথম ধাপে বার্ষিক কোটা নির্ধারণ ছিল ১ হাজার ৯৪১ জন। এইচআরডি কোরিয়ার চাহিদা মোতাবেক ইপিএস কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানোয় পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের জন্য দুই ধাপে আরও অতিরিক্ত ৩ হাজার কর্মসংস্থান কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ইপিএসের ইতিহাসে বাংলাদেশের জন্য রেকর্ড।
কোরিয়া ও বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির ফলে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১১৩ জন কর্মী কোরিয়ায় গিয়েছেন। তবে নভেম্বর থেকে প্রতি সপ্তাহে কোরিয়ায় যাওয়া কর্মীর সংখ্যা বেড়ে ১৫০ জনে উন্নীত হবে। তা ছাড়া প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ১০০ কর্মী যোগ হবে।
বোয়েসেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ৩৮টি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৩ হাজার ৯৭৮ জন কর্মী সফলভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় গমন করেছেন। আজ আরও ২৪৮ জন দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন। তা ছাড়া এই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ১ হাজার ৫০০ জন ইপিএস কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবেন।
২৪৮ জনকে বিমানবন্দরে বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসস্থান সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন।
কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন বলেন, ‘২০২২ সালের শেষ নাগাদ প্রায় মোট ৫ হাজার ২০০ বাংলাদেশি কর্মী কোরিয়ায় যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘২০২৩ সালে সপ্তাহে প্রায় ১৫০ বাংলাদেশি কর্মী কোরিয়ায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য ইপিএস কোটা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ, কোরিয়ান অনেক নিয়োগকর্তা বাংলাদেশি কর্মীদের পরিশ্রম ও বিশ্বস্ততার প্রতি সন্তুষ্ট।’
কর্মীদের উদ্দেশ করে সচিব মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ‘কর্মী যারা যাচ্ছেন, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে কাজ করবেন। আমরা আপনাদের জন্য গর্বিত। কোরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীরা খুব ভালো কাজ করছেন। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য কোরিয়া একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।’
সৌজন্যেঃ বাংলা ট্রিবিউন